• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সীমান্ত এলাকায় অনেকেই জানেনা করোনা ভাইরাস কি

  শাহারিয়ার রহমান রকি, ঝিনাইদহ

৩১ মার্চ ২০২০, ০৯:৪৯
ঝিনাইদহ
স্থানীয়দের অবাধে ঘোরাফেরা

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্বে মহামারী আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। প্রতিদিন বিশ্বে সহস্রাধিক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে এই মহামারীতে। ফলে এই মহামারী মোকাবেলায় ঝিনাইদহ সহ বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় নেওয়া হয়েছে সতর্ক ব্যবস্থা, চলছে নানা প্রচার প্রচারণা। কিন্তু এ জেলার সীমান্ত এলাকার মানুষের মাঝে পৌঁছায়নি সচেতনতার বার্তা। ফলে করোনা আতঙ্কে দিন কাটছে এখানকার মানুষের।

জানা যায়, বাংলাদেশের দক্ষিণে ভারত সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহ। জেলার মহেশপুর উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে সীমান্ত এলাকা রয়েছে ৭০ কিলোমিটার, এর মধ্যে কাঁটাতার বিহীন এলাকা প্রায় ১১ কিলোমিটার। এসব এলাকায় রয়েছে অসংখ্য মানুষের বসবাস।

এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা পুলিশ থেকে জানা যায়, জেলায় ৩৩৪ জন প্রবাসী সহ মোট ৯৫৩ জনকে হোম-কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে, এর মধ্যে মেয়াদ শেষ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে বলা হয়েছে ৫১৩ জনকে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানা যায় চলতি মার্চ মাসেই ভারত, ইতালি সহ বিভিন্ন দেশ থেকে জেলায় ৪০৩৩ জন এসেছে।

বর্তমান সময়ে শহরের মানুষ করোনা ভাইরাস সম্পর্কে কিছুটা জানলেও প্রত্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে নেই করোনা ভাইরাসের কোন ধারনা। স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসন কিংবা কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চালানো হয়নি সচেতনতামুলক তেমন কোন কার্যক্রম। যার ফলে হাটে বাজারে, দোকান-পাটে চলাচলের কারণে তাদের ও পরিবারের সদস্যদের ছড়িয়ে পড়তে পারে এই করোনা ভাইরাস।

অন্য দিকে সীমান্তের এপারে নো-ম্যানস ল্যান্ডে ভারতীয়রা তাদের জমি চাষাবাদ করতে আসার সুযোগে সীমান্তের এ মানুষের সাথে তৈরি হচ্ছে তাদের সক্ষতা, যা করোনার ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত সচেতন মহল।

মহেশপুর সীমান্তের কানাইডাঙ্গা এলাকার কৃষক দিদার আলী বলেন, আমরা জানিনা করোনা ভাইরাস কি, কিভাবে তা ছড়িয়ে পড়ে। সচেতনতামুলক কার্যক্রম না চালালে ও না জানালে বুঝবো কি করে এ ভাইরাসে কি ক্ষতি হয়। সবার উচিত আমাদের জানানো, কি ভাবে কি করতে হবে।

সীমান্তের যাদবপুর, জুলুলী, সামন্তা সহ বিভিন্ন এলাকার অন্যান্য বাসিন্দারা জানান, করোনা ভাইরাস হচ্ছে আমরা তো সীমান্তে আছি ওসব কি আমরা বুঝিনা। এ রোগটা হলে কি হয় ভাই, কি ভাবে ছড়াই, আমাদের তো না বুঝালে আমরা বোজবোনা। কিভাবে ছড়ায় আর এতে কি হয় এগুলো আমাদের বুজান জানান। এ রোগের কোন চিকিৎসা আছে কিনা জানার দরকার আমরা তো থাকি সীমান্ত এলাকায় কিছুই জানতে পারি না আমরা।

এখানে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন মূলক কিছুই নেই। তবে আমরা টিভিতে অনেক কিছু শুনছি। কিন্তু আমরা চাই আমাদের এলাকার জন্য করোনা ভাইরাস সম্পর্কে আমাদের জানালে আমারা সচেতন হতে পারি সরকার যেন এমন একটা উদ্যোগ নেই। তা না হলে আমরা জানবো কিভাবে করোনা ভাইরাস এর ক্ষতি কি হয়। এজন্য যদি আমাদের জনসচেতনতামূলক কোন বার্তা না দেয় তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।

ঝিনাইদহ মানবাধিকার কর্মী শরিফা খাতুন বলেন, বিশ্বে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এতে অনেক লোক মারা গেছে, বাংলাদেশে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল না। তবে বাংলাদেশিরা যারা বাইরে থেকে এসেছে তাদের মধ্যে অনেকেরই করোনা ধরা পড়েছে যার প্রেক্ষিতে আমরা শঙ্কিত। তাই সীমান্তের বাসিন্দাদের এখনই যদি সচেতন করা না যায় তাহলে তাদের বড় অংশ সংক্রমিত হতে পারে এই ভাইরাসে। বিশেষ করে বাংলাদেশে যেহেতু ভারতের সঙ্গে একটা বড় এরিয়া সীমান্ত রয়েছে এবং ভারতেও অনেকেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এবং অনেকেই আক্রান্ত। সে জায়গা থেকে ওই দেশের কৃষক এই দেশে তাদের জমিতে চাষ করতে আসে। যার কারণে বাংলাদেশের নাগরিকদের সাথেও তাদের একটা যোগাযোগ থাকে। আর যেহেতু পাশাপাশি জমিতে চাষ করে সেখান থেকেও তাদের নিকটদুরত্বের কারণে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে আমি মনে করি সীমান্ত এলাকার দিকে আমাদের সবাইকে বেশী দৃষ্টি দেওয়া দরকার। আমাদের বর্ডার বেল্টের যে মানুষগুলো আছে তাদেরকে করোনা ভাইরাস নিয়ে আরও সচেতন করতে হবে।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম জানান, সীমান্তবর্তী মানুষকে সচেতন করতে নেওয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। আমাদেরও যেসব অফিসার আছে তাদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য শিক্ষা সবাইকে দিয়ে যাচ্ছি। মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করছে তারাও এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাছাড়া জেলা করোনা ভাইরাস কমিটির যে তথ্য অফিসার আছে আমারা তাকে তথ্য দিয়ে স্বাস্থ্য বার্তা কি কি প্রচার করতে হবে তারাও এটার কার্যক্রম শুরু করেছি ।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড