আরিফ সবুজ, নোয়াখালী
সারাবিশ্ব আজ গৃহবন্দী। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। প্রতিটি হসপিটাল রয়েছে বেকায়দায়। বাংলাদেশেও পড়েছে করোনার প্রভাব । মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হলেও আক্রান্ত অর্ধশতাধিক। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ হাট, বাজার, দোকানপাট সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করেছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সর্বোচ্চ সচেতনতা সৃষ্টি করছেন প্রশাসন। ঠিক এই মুহূর্তে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ইটভাটা গুলোতে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।
রবিবার (৩০ মার্চ) নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ইটভাটা গুলোতে গিয়ে কথা হয় ইটভাটা শ্রমিকদের সাথে। চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের একটি ইটভাটার শ্রমিক মো. আলী আজগর। ১ লক্ষ টাকা দাদন নিয়ে এবছরের জন্য কাজে এসেছেন তিনি। নানা উৎকণ্ঠায় কাটছে তার জীবন। মালিক পক্ষ থেকে ছুটি না দেয়ায় কোথাও যেতে পারছেন না। এসময়েও একই সাথে ৩০০ লোকের বসবাস একটি ইটভাটায় । একটি টয়লেট আর ইলিশ পাইলে (গাদাগাদি করে) ঘুমাতে হয় তাদের।
একই এলাকার আরেকটি ইটভাটায় গিয়ে কথা হয় মো. জামশেদ নামে আরেক ইটভাটা শ্রমিকের সাথে। ৭-৮ মাস তার ইটভাটায় কাটে। এর জন্য ১লক্ষ ২০হাজার টাকা দেয় মালিক পক্ষ। করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জানতে চাইলে জামশেদ জানান, মৃত্যু হোক আর যা হোক মালিকের অনুমতি ছাড়া কোথাও যেতে পারবো না। এজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন জামশেদ। তার সাথে একমত প্রকাশ করেন ইটভাটার সকল শ্রমিকগন। তাদের অভিযোগ চতুর্দিকে দোকানপাট বন্ধ থাকায় তারা নাস্তা-পানি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পণ্যও ক্রয়ের সুযোগ পান না।
আরও পড়ুন : জমি-জমার বিরোধে প্রাণ গেল ছোট ভাইয়ের
এ ব্যাপারে মালিক পক্ষ কোন মন্তব্য না করলেও কয়েকজন ইটভাটার ম্যানেজার জানান, এসময় হলো ইট প্রস্তত করার সময় । কিছুদিন পরেই বর্ষা নামবে। তখন এমনিতেই ইটভাটা গুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এসময়ে যদি শ্রমিকদের ছুটি দেয়া হয় তাহলে মালিক পক্ষ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এছাড়াও ইটভাটা শ্রমিকরা একটি সীমাবদ্ধ জায়গায় অবস্থান করে। তাদের সাথে জনসাধারণের বিচরণ নেই বললেই চলে। তবে ইটভাটা বন্ধের ব্যাপারে মালিক পক্ষের সাথে কথা চলছে বলেও অনেকে জানান।
এ বিষয়ে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম ইবনুল হাসান ইভেন জানান, ইটভাটার ব্যাপারে সরকারি কোন নির্দেশনা না থাকায় তাদের উপর কোন চাপ প্রয়োগ করা যাবেনা। তবে সুবর্ণচর উপজেলায় ১০টি ইটভাটার প্রায় সবগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে সরকারি নির্দেশনা আসলে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড