সারাদেশ ডেস্ক
স্ত্রী প্রথমে পাড়া–প্রতিবেশীদের সহযোগিতা চান। কেউ এগিয়ে আসেনি। স্ত্রী অ্যাম্বুলেন্সের জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশে। কিন্তু সারা রাতে কোনো সাড়া পাননি। রাতে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) হটলাইনে ফোন করেন। সেখান থেকেও কোন সারা পাননি। ওই নারী বলেন, ‘দেখছি’ বলার বেশি কেউ কিছু করেননি। ছোট একটা মেয়েকে নিয়ে ঘরে নিস্তেজ মানুষটার পাশে বসে আছি—জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বেঁচে আছে, না মরে গেছে, বুঝতে পারছি না। কী করব বুঝতে পারছি না। করোনাভাইরাসের ভয়ে কেউ তো কাছে আসছেন না।’
বগুড়ার শিবগঞ্জের এক ব্যক্তি গাজীপুরে এক মুদি দোকানে কাজ করেন। কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে জ্বর ও সর্দি–কাশিতে পড়েন। গতকাল শুক্রবার রাতে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। অসুস্থ স্বামীকে হাসপাতালে নেওয়ার কি না করেছেন, কার কাছেই না গেছেন, কাকেই না মুঠোফোনে ডেকেছেন। কিন্তু কেউ সাড়া দেই নি।
ওই ব্যক্তির স্ত্রীর অভিযোগ, সরকারের দেওয়া হটলাইনে ফোন দিয়ে কাউকে পাননি। বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের হটলাইনে ফোন করেও সাড়া পাননি।
আজ শনিবার হটলাইনে বিষয়টি জানার পর শেষে এগিয়ে আসেন মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শফিক আমিন। তিনি বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীকে জানান। পরে সিভিল সার্জন একজন চিকিৎসা কর্মকর্তাকে ওই ব্যক্তির বাড়িতে পাঠান।
আরও পড়ুন : রংপুর মেডিকেলে করা যাবে করোনা টেস্ট হাঁটু কাদায় হারিয়ে যাচ্ছে পারকির ঐতিহ্য কুতুপালং ট্রানজিট পয়েন্টকে রোহিঙ্গাদের জন্য কোয়ারেন্টিন ঘোষণা |
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শফিক আমিন বলেন, ‘হাসপাতালের হটলাইনে ফোন করা নারীর বর্ণনা শুনে মনে হলো, মানবতার কাছে আমরা হেরে গেছি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হোক বা না হোক, একজন নাগরিক হিসেবে তাঁর চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে। আমরা কেউ তাঁর পাশে দাঁড়াতে পারিনি। আমি নিজেও সকাল থেকে আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগের দীর্ঘ চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। শেষে সিভিল সার্জন ও পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।’
ওই ব্যক্তির বাড়িতে একজনকে পাঠানো হয়েছে। তিনি এখনো কিছু জানাননি বলে জানিয়েছেন, সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর কবির বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে কেউ বলেননি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড