• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

খোকসায় ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা, নেই লজিস্টিক সাপোর্ট

  খোকসা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া

২৩ মার্চ ২০২০, ১৮:৪৯
চিকিৎসক
প্রয়োজনীয় লজিস্টিক স্বল্পতার মাঝেও ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিচ্ছেন একজন চিকিৎসক (ছবি : দৈনিক অধিকার)

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সদ্য বিদেশফেরত প্রায় ২৮ জনেকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে করোনা প্রতিরোধে ১০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হলেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার কিটসহ লজিস্টিক সাপোর্ট। ফলে ঝুঁকি নিয়েই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির পর প্রবাস থেকে প্রায় ৬৫ জন দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে ২৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

এ দিকে, সোমবার (২৩ মার্চ) পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ অমান্য করায় ৪ জন প্রবাসীকে প্রায় ২২ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে ভারত, ইতালি, দুবাই, সিঙ্গাপুরসহ করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ফিরে আসা এসব প্রবাসীদের পরিবারের দাবি- তারা সকলেই সুস্থ রয়েছেন।

অন্যদিকে করোনা আক্রান্তদের জরুরি চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে রোগ নির্ণয়ের কিট, রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন, আইসোলেশন ওয়ার্ডের রোগীদের জন্য কোনো প্রকার অতিরিক্ত ওষুধের বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত চিকিৎসক-নার্সদের সুরক্ষা পোশাকও সরবরাহ করা হয়নি বলেও একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে ইতোমধ্যেই অনেক চিকিৎসক শনিবার (২১ মার্চ) থেকে প্রাইভেট চেম্বারে জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন।

ওই দিন দুপুরে রেশমা খাতুন নামে এক নারী সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত তার স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের এক মেডিকেল অফিসারের চেম্বারে যান। ওই সময় ডাক্তারের লোকেরা সাফ জানিয়ে দেন ‘স্যার’ সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত রোগী দেখছেন না। পরে বাধ্য হয়ে ওই নারী গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে তার ছেলেকে খাওয়াচ্ছেন।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি ও বহির্বিভাগে কর্মরত চিকিৎসকরা সব ধরনের রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন। কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার পোশাকসহ নেই কোনো প্রকার সুরক্ষার ব্যবস্থা। একই হাল সাধারণ ওয়ার্ডে কর্মরত নার্সদের ক্ষেত্রেও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানান, নিজেদের সুরক্ষায় একটি করে হাত ধোয়ার সাবান আর ছোট একটি বোতলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে এখন আমরা নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে ছাত্রজীবনের অ্যাপ্রন ব্যবহার করছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। সদ্য দেশে ফেরা প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া রোগী বাড়লে স্থানীয় সরকারি কলেজে কোয়ারেন্টিন ও চিকিৎসা ক্যাম্প করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে ডাক্তার ও নার্সদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পোশাক ও ওষুধের স্বল্পতা রয়েছে।’

আরও পড়ুন : লাল ঝান্ডা উড়ছে বাগেরহাটের সাড়ে ৩ হাজার বাড়িতে

এ ব্যাপারে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবর রহমান দৈনিক অধিকারকে জানান, সদ্য দেশে ফেরা প্রবাসীদের বাড়িতে লাল পতাকা ও স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতি মুহূর্তে সরেজমিন ও মুঠোফোনে তাদের অবস্থান তদারকি করা হচ্ছে। বিপদকালীন যেসব প্রবাসীরা দেশে ফিরেছেন তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কাজ করে চলেছে।

ওডি/আইএইচএন

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড