ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহে মরণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিদেশফেরতসহ ২২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে মহেশপুরে ৫, কালীগঞ্জে ১২ এবং সদর উপজেলাতে ৫ জন রয়েছে। এদের মধ্যে কেউ ইতালি, কেউ ভারত ও কেউ আমেরিকা থেকে দেশে এসেছে।
এমন সন্দেহজনকভাবে বিদেশফেরত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলেও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়নি কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
হাঁচি-কাশি কিংবা জ্বর-ঠান্ডায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য নেই আলাদা চিকিৎসা ব্যবস্থা। এসব রোগীরা কোথায় চিকিৎসা নেবে তার জন্যও নেই হেল্প ডেস্ক। ডায়েরিয়া বিভাগে শুধু ৩টা বেড রেখে আইসোলেশন ইউনিট রাখা হয়েছে তবে সেখানে নেই অন্য কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা।
চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত ওয়ার্ড বয় থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পর্যন্ত নেই কোনো ব্যক্তিগত সুরক্ষা ব্যবস্থা। ফলে করোনা আতঙ্কে চিকিৎসা সেবা প্রদান নিয়ে চরম শঙ্কায় পড়েছেন তারা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিজ জেলার সদর হাসপাতালের এই চিত্রে হতাশাগ্রস্ত সর্বস্তরের মানুষ। অথচ এই হাসপাতালেই প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নানা রোগে আক্রান্ত অন্তত ১৪ শতাধিক মানুষ চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে জরুরি ও বহিঃবিভাগের মাধ্যমে।
সদর হাসপাতালে সেবা নিতে আসা সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, সারা দিন হাসপাতালে থাকলাম, দেখলাম বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে আমার মতো চিকিৎসা নিতে। তারা যত্রতত্র হাঁচি-কাশি দিচ্ছে, কারও মুখেই মাস্ক নেই, নেই পরিচ্ছন্ন অবস্থা। এখান থেকে তো যে কারও মাধ্যমেই করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে। কারণ আমরা কেউ তো জানি না, কার শরীরে এই ভাইরাস আছে।
অন্যান্য রোগীরা জানান, যেখানে সারাদেশে সতর্ক অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে বেহাল চিত্র। হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়ক তো কিছুই করছে না। শুধু বলে বেড়াচ্ছে এ করব তা করব। হাসপাতালে প্রবেশ মুখে হেল্প ডেস্ক থাকতে হবে, হাঁচি-কাশি বা ঠান্ডা আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা চিকিৎসা ডেস্ক চালু করা উচিত। তবে স্বাস্থ্য সচিবের নিজ জেলায় এমন চিত্র খুবই দুঃখজনক।
মেডিসিন বিভাগের একাধিক সেবিকা বলেন, ‘আমাদের কোনো সেফটি নেই। কোনো গাউন বা মাস্ক কিছুই নেই হাসপাতালে। এগুলো বলতে গেলেই স্যাররা বলে দেখছি। আমরা যদি নিরাপদে না থাকতে পারি, রোগীদের সেবা দেব কীভাবে। আগে আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন তারপর সেবা।
তাদের দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করেন।
তবে এ সকল অভিযোগের বিষয়ে সদর হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা তত্ত্বাবধায়ক ডা. আয়ুব আলী বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা আছে। করোনা শনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত আতঙ্ক রোধে চিকিৎসকদের গাউন, মাস্ক, আই-প্রটেকটর ব্যবহার করতে দিচ্ছি না। এগুলো পরলে মানুষ আতঙ্কিত হবে। তবে এর আগে যদি চিকিৎসা দিতে গিয়ে কোনো চিকিৎসকের শরীরের আক্রান্তের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে সে বিষয়ে তিনি উত্তর দিতে পারেননি।
আরও পড়ুন : আখাউড়ায় গাঁজাসহ ধরা খেল পুলিশ কনস্টেবল
এ দিকে এ বছর নতুন করে আসা কোনো গাউন দেখাতে পারেননি তত্ত্বাবধায়ক। গেল বছরের একটি গাউন ও কয়েকটি মাস্ক এবং কিছু চশমা দেখান, যা আলমিরায় রেখেছেন তিনি। তবে তার কাছে থাকা মাস্ক সাধারণ করোনা প্রতিরোধী না হওয়ায় তা আগেই ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এর পরিবর্তে বলেছিল এন ৯৫ মাস্ক ব্যবহারের কথা।
ওডি/জেএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড