অধিকার ডেস্ক
সারাদেশে যে হারে ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনা ঘটে চলছে সেই হারে আসামি ধরা পড়ছে না। এসব ঘটনার মূলহোতাদের গায়ে ছিটেফোঁটাও আঁচ লাগাতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আর এতে একদিকে যেমন আসামিরা আরেকটি অপরাধের দিকে এগুচ্ছে ঠিক তেমনি ভুক্তভোগীদের ভয়-ভীতির মধ্যে রাখছে।
তবে কিছু কিছু আসামি ধরার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবহেলা যেমন আছে ঠিক তেমনি সীমাবদ্ধতা রয়েছে সমান ভাবে। এসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের অসহযোগিতা অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদীর মাধবদীতে। কর্মচারীর স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে দোকান মালিকের বিরুদ্ধে।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই সত্যতা স্বীকার করেছে। এই লম্পট শিপন বলেন, টাকার বিনিময়ে মাধবদী পৌরসভার কাউন্সিলরের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।
ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেলেন শিপন। উল্টো কর্মচারী জাহাঙ্গীরকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য করে।
এদিকে, ১১ মার্চ উখিয়ায় কুতুপালং মধুরছড়া ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা যুবককে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ধরা পড়েনি কোন আসামি।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্জিনা আক্তার জানান, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা উদঘাটন করা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
অপর ঘটনাটি ঘটে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায়। ১০ মার্চ পরকীয়া প্রেমিককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে প্রেমিকা জাকিয়া আক্তার মীমের (১৮) বাবা ও স্বামী। আহত প্রেমিকের নাম রবিউল (২১)।
রবিউল উপজেলার চন্দনধূলর গ্রামের মো. হোসেন শেখের ছেলে। আর প্রেমিকা জাকিয়া আক্তার মীম উত্তর কুসুমপুর (শেখবাড়ি) গ্রামের দলিল লেখক জাহিদ হাসান জাকিরের মেয়ে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই ভুক্তভোগী রবিউলের বাবা মো. হোসেন শেখ বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় জাহিদ হাসান জাকিরকে এক নম্বর করে আরও তিনজনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলা হলেও ধরা পড়েনি আসামিরা। সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রবিউলকে উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও একটি ঘটনা ঘটে গাজীপুরের কালীগঞ্জে। ৮ মার্চ গ্রামের একটি নির্জন জায়গা থেকে গুরুতর আহত এক শিশুকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ থানার এএসআই কাজী কামাল।
পুলিশের ধারণা ছেলেটিকে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্যাতন করে মৃত ভেবে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। চার দিন হলেও শিশুটির জ্ঞান ফেরেনি। আটক করতে পারেনি কাউকে।
বুধবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় পুকুর থেকে এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত নবজাতকের বয়স ৩ দিনের মতো হতে পারে।
এ ঘটনার কোন কূলকিনারা হয়নি। ধরতে সক্ষম হয়নি আসামিকে।
এদিকে, মঙ্গলবার (১০ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ে সামশুল আলম (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।জেলার সদর উপজেলার শিবগঞ্জ-চিকনডোবা এলাকার একটি আমবাগান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে জানান, স্থানীয়রা রাত সাড়ে ৯টার দিকে আম বাগানের ভেতর একটি মরদেহ দেখে থানায় খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি বলেন, ‘মরদেহ মর্গে পাঠানো হবে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। আপাতত কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা বলা যাচ্ছে না।’
আরও পড়ুন :খুলনায় সাবেক শ্রমিক লীগ নেত্রী মুক্তা গ্রেপ্তার
এমনি ভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড হচ্ছে চাপা পড়ে যাচ্ছে সময়ের ব্যবধানে। আসামিরা এক সময় প্রকাশ্যে চলে আসে। আর ভুক্তভোগীরা হয়ে পড়ে কোণঠাসা। তবে এ থেকে বেরিয়ে আসতে সমাজের কর্তাব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে।
ওডি/এএইচ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড