নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদীর পলাশে আল কাইয়ুম নিপুণ হত্যায় আটক প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমি নিজেই হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
সোমবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ভাগ্যেরপাড়া এলাকার প্রবাসী মোকাররমের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে কাইয়ুমের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জেলার পলাশ উপজেলার ভাগ্যের পাড়া মহল্লার মোকারমের স্ত্রী জেসমিন আক্তার সুমির সাথে পরিচয় হয় নিহত আল কাইয়ুম নিপুণের। এরপর শুরু হয় তাদের প্রেম। অবশেষে সেই প্রেম পরকীয়া ও শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। পরকীয়া সম্পর্ক চলাকালীন কাইয়ুম তার মোবাইলে তাদের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও চিত্র ধারণ করে রাখে। সেই ভিডিও পরিবারকে দেখানোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সুমির সাথে প্রতিনিয়ত শারীরিক সম্পর্ক জোরপূর্বক আদায় করতে থাকে।
শুধু তা-ই নয়, এই ভিডিও চিত্রকে পুঁজি করে বিগত ছয় মাস যাবত সুমির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে থাকে কাইয়ুম। তারই ধারাবাহিকতায় গত তিন মার্চ রাতে কাইয়ুম শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও টাকা আনতে সুমির বাড়িতে গেলে প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমি কৌশলে পানির সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে কাইয়ুমকে অচেতন করে বিছানার চাদর দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহটি গুম করতে বস্তাবন্দি করে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে।
অপরদিকে নিখোঁজের ঘটনায় নিহত কাইয়ুমের ভাই জাহিদুল ইসলাম অপু নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরই প্রেক্ষিতে প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমিকে পুলিশ আটক করে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে সুমি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে রোমহর্ষক বর্ণনা দেয়।
এ সময় প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমির দেওয়া তথ্যমতে হত্যার ৫ দিন পর সোমবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদের নেতৃত্বে পলাশ থানার ওসি শেখ মো. নাসির উদ্দিন ও নরসিংদী মডেল থানার ওসি সৈয়দুজ্জামানসহ পুলিশের উপস্থিতিতে সুমির স্বামী মোকারমের বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে নিহত কাইয়ুমের বস্তাবন্দি মরদেহটি উদ্ধার করে এবং ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার সন্দেহে মোকারমের স্ত্রী জেসমিন আক্তার সুমি, শশুর-শাশুড়িসহ নয়জনকে আটক করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পলাশ থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ূন কবির জানান, এ ঘটনায় নিহতের ভাই জাহিদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে সোমবার (৯ মার্চ) রাতেই প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমির নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহেদ আহমেদ জানিয়েছেন, নিহত কাইয়ুমের সাথে ভাগ্যের পাড়া গ্রামের মোকারমের স্ত্রী ও এক সন্তানের জননী জেসমিন আক্তার সুমির সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। পরকীয়ার জেরে সুমির পরিবারের লোকজন কাইয়ুমকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য বাড়ির পাশে সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে।
আরও পড়ুন : কুড়িগ্রামে বিয়েকে কেন্দ্র করে কিশোরীকে শিকলে বন্দি
মনোহরদী উপজেলার গোতাশিয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে আল কাইয়ুম। গত ৩ মার্চ সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ হয় আল কাইয়ুম নিপুণ। নিহত কাইয়ুমের বাবা বিদেশে থাকায় নরসিংদীর ভেলানগর এলাকায় মা, ভাই, স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন।
ওডি/এএইচ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড