ফরিদপুর প্রতিনিধি
৭১-এর ১০ মার্চ মহান মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার প্রাক্কালে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে ফরিদপুরে প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। এদিনেই ফরিদপুরের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস ও ভবনে জীবনের মায়া ত্যাগ করে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল সবুজের পতাকা ওড়ায়। দিবসটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ফরিদপুরে পালিত হয়েছে পতাকা উত্তোলন দিবস।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১০ মার্চ) আলিমুজ্জামান হলরুমে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ এতে অংশ নেন। দিবসটি উপলক্ষে দলমত নির্বিশেষে ফরিদপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলায় পরিণত হয় অনুষ্ঠানস্থল।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন- স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন ডেপুটি লিডার ও বিএলএফ এর ফিল্ড কমান্ডার, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের তৎকালীন অন্যতম শীর্ষ নেতা শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর।
ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন মৃধার সভাপতিত্বে সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মুজিব বাহিনীর কমান্ডার ও রুকসুর তৎকালীন জিএস বীর মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন আহমেদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ফরিদপুরের সাবেক কমান্ডার মো. আবুল ফয়েজ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা গুলজার দুলাল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরুদ্দিন আহমেদ খোকন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর সেদিন পতাকা উত্তোলন দিবসের নানা ঘটনা বর্ণনা করে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে সেদিন যেই সংগ্রাম হয়েছিল, আজ সেই অবদানের কথাই আমরা এখানে স্মরণ করছি। কোনো দল বা রাজনীতিকে তুলে ধরতে নয়। কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭১-এর ১০ মার্চ ফরিদপুরে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এ উপলক্ষে ওইদিন শহরের অম্বিকা ময়দানে ছাত্র গণজমায়েতের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দেন, ফরিদপুরের মাটিতে এরপর থেকে কোথাও আর পাকিস্তানের পতাকা উড়বে না। স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়বে। সমাবেশস্থলে পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়ে সেখানেই স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখান থেকে ফরিদপুর সার্কিট হাউসে পতাকা উড়াতে গেলে সেখানে অবস্থানরত পাকিস্তানী সৈন্যরা লাঠি ও বেয়েনেট চার্জ করে। বাঁধা উপেক্ষা করেই তারা সেখানে পতাকা উত্তোলন করেন।
আলোচনা সভার আগে স্বাধীন বাংলার মানচিত্র পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করে শুরু হয় আলোচনা সভা।
আরও পড়ুন : মির্জাগঞ্জে ইয়াবাসহ যুবক গ্রেপ্তার
প্রসঙ্গত, তৎকালীন রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্রছাত্রী সংসদ (রুকসু) ভিপি, জিএস ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে গঠিত হয় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। পাশাপাশি ছিল স্বেচ্ছাসেবক দল।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড