বরিশাল প্রতিনিধি
শিক্ষার্থীদের পাঠদানকালে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তিসহ গরুর মাংস খাওয়াকে হারাম মন্তব্য করায় বরিশালে উজ্জল কুমার রায় (৪৭) নামে এক শিক্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা।
রবিবার (৮ মার্চ) রাতে জেলার গৌরনদী উপজেলার মেদাকুল বাজারে এই গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত উজ্জল উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ‘মেদাকুল বিএমএস ইনস্টিটিউশনের সহকারী শিক্ষক ও সমরসিংহ গ্রামের প্রফুল্ল রায়ের ছেলে।
এ দিকে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিচারের দাবিতে গ্রামবাসী সোমবার (৯ মার্চ) বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
তবে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে প্রাথমিকভাবে সহকারী শিক্ষক উজ্জল কুমার রায়কে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দশম শ্রেণির দ্বিতীয় ক্লাসে বিজ্ঞান পড়াতে আসেন সহকারী শিক্ষক উজ্জল কুমার রায়। পরে বিজ্ঞান বিষয়ের ‘খাদ্যে আমিষ’ নিয়ে পাঠদানকালে তিনি বলেন, ‘আলেম-ওলামাদের দিয়ে গরু কেটে মাংস খাওয়াটা ভণ্ডামি। কচ্ছপ খাওয়া উত্তম, গরু খাওয়া হারাম।’
ওই শিক্ষক পাঠদানের সময় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানায় অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মাঝেও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
কয়েকজন ক্ষুব্ধ অভিভাবক জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী ওই শিক্ষক রাতে মেদাকুল বাজারে আসলে গ্রামবাসী তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে খবর পেয়ে গৌরনদী থানা পুলিশ রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক উজ্জল কুমার রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল আহাদকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই তদন্ত কমিটিকে ম্যানেজিং কমিটির কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।’
এ দিকে, নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে উজ্জল কুমার রায় থানা হাজতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটি কুচক্রী মহল আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
অন্যদিকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের ফাঁসির দাবিতে প্রায় দুই শতাধিক ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী সোমবার মোদাকুল বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে মিছিলটি ইল্লা-বাকাই সড়ক হয়ে বাকাই বাজারে গিয়ে শেষ হয়।
আরও পড়ুন : করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ফমেকে স্বাস্থ্য বিভাগের তোড়জোড়
এ ব্যাপারে গৌরনদী থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘খবর পেয়ে রবিবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই শিক্ষককে ৫৪ ধারায় বরিশাল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরনদী সার্কেল) আব্দুর রব হাওলাদার ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উল্লেখ করে ওসি গোলাম ছরোয়ার বলেন, বিষয়টিতে তদন্ত সাপেক্ষে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড