কুলেন্দু শেখর দাস, সুনামগঞ্জ
হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে হাইস্কুল না থাকায় ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী ঠিক তেমনি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে উঠছে বর্ষা মৌসুমে।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, শত শত শিক্ষার্থী নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত করে বর্ষায় নৌকা, হেমন্তে পায়ে। এভাবে চলছে স্কুলে যাতায়াত। ইউনিয়নের অধিকাংশ ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার পরিধি প্রাথমিক শিক্ষার মধ্যেই আটকে যাচ্ছে। ধর্মপাশা উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের মধ্যে সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নটি উপজেলার পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত।
এ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কয়েকশ শিক্ষার্থী প্রায় ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার দূরের ধর্মপাশা উপজেলার হাইস্কুল ও পাশের নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জের বিভিন্ন হাইস্কুলে ক্লাস করে। তাদের প্রায় ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার পথপায়ে হেটে অথবা ১০০ থেকে ১২০ টাকা খরচ করে দৈনিক অটোতে ও আসা যাওয়া করতে হয়।
স্কুল পড়ুয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলাপকালে জানায়, কষ্ট হলেও তারা সুশিক্ষিত হতে চায়। তারা সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে একটি বিদ্যালয় স্থাপনের জোর দাবি জানায়।
গ্রামের যুবক তানভীর হাসান ও মো. সুমন মিয়া বলেন , শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হাওর পাড়ের এ অঞ্চলে একটি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করা খুবই প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু তাহের মো. কামরুল হাসান জানান, সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে কোন হাইস্কুল নেই এটা সত্যিকার অর্থে বেমানান, কেউ যদি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়, আমার এ ব্যাপারে সব রকম সহযোগিতা করবো।
অত্র ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার গোলাম মোস্তফা ধন মিয়া (৭৫) বলেন, এই ইউনিয়নে একটি জুনিয়র স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলেও কোন শিক্ষক না থাকায় এই জুনিয়র স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি সংসদ সদস্যর নজরে আনতে। তাহলেই এই ইউনিয়নে হাইস্কুল হওয়ার আশাবাদী।
৮নং ওয়ার্ড মেম্বার সাদেকুর রহমান (৫৫) বলেন, সারাদেশে শিক্ষার মান উন্নয়ন হলেও আমাদের এই ইউনিয়নে শিক্ষার মান প্রাথমিক শিক্ষা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। আমরা চাই এই ইউনিয়নে একটি হাইস্কুল প্রতিষ্ঠিত হউক।
মো. লাল মিয়া (৬৫) বলেন, আমাদের ইউনিয়নে কোন হাই স্কুল নেই। হাই স্কুল থাকলে ছেলে মেয়েরা পড়ালেখা করতে পারত, বেশী খরচ হয় বিধায় ছেলে, মেয়েদের লেখা পড়া বন্ধ করে দিয়েছি।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমানুর রাজা চৌধুরী (৫০) জানান, এখানে উচ্চ বিদ্যালয় না থাকা এই ইউনিয়নের মানুষের প্রধান সমস্যা। এখানে অন্তত একটি বিদ্যালয় থাকা খুবই জরুরী। আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করি।
আরও পড়ুন : দেশের বৃহৎ কো-কম্পোস্ট প্লান্ট নির্মাণ হচ্ছে সৈয়দপুরে
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, অবশ্যই একটি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার, এই সরকারের আমলে, স্কুল, কলেজ, বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপন হচ্ছে। এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্য টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে। গ্রাম হবে শহর ইনশাল্লাহ, উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা হবে বলে তিনি জানান।
ওডি/এএইচ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড