• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শরীয়তপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ

  শরীয়তপুর প্রতিনিধি

০৭ মার্চ ২০২০, ১৮:৩৪
প্রধান শিক্ষক
ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম (ছবি : দৈনিক অধিকার)

পরকীয়া সম্পর্কের জেরে শরীয়তপুরে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে সহকারী শিক্ষিকাকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনার স্থায়ী সমাধান চেয়ে বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন ওই শিক্ষিকা।

অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষকের নাম আব্দুর রহিম। তিনি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ২০ নম্বর পূর্ব গৈড্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১ নম্বর পশ্চিম রামভদ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকা চাকরির সুবাদে ২০১৬ সাল থেকে ভেদরগঞ্জ পৌরসভার গৈড্যা এলাকায় ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। বাসার কাছে হওয়ায় ছেলেকে তিনি ২০ নম্বর পূর্ব গৈড্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে ছেলের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এই সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই শিক্ষিকার স্বামীর অনুপস্থিতিতে তার বাসায় যাতায়াত করতেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম। এরই জেরে ওই শিক্ষিকার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি। এমনকি এলাকাবাসী ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম ও ওই শিক্ষিকাকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেছিলেন।

পরে বিষয়টি শিক্ষিকার ভাড়া বাসার লোকজনসহ তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন জেনে গেলে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ আব্দুর রহিম তার স্বামীকে তালাক দেওয়ার শর্তে বিয়ের প্রস্তাব দেন। পরে কথামতো স্বামীকে তালাকও দেন ওই শিক্ষিকা। কিন্তু আব্দুর রহিম তাকে বিয়ে করবে বলেও এখনো নানা টালবাহানা করছেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষিকা।

এ দিকে, নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক গৈড্যা এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম ও শিক্ষিকার মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। গত ২০ ডিসেম্বর ওই শিক্ষিকার বাসায় তাদের আপত্তিকর অবস্থায় ধরার পর আব্দুর রহিমকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। ওই সহকারী শিক্ষিকার এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং প্রধান শিক্ষকের দুই ছেলে রয়েছে। এ সময় তারা উভয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

এ দিকে, শনিবার (৭ মার্চ) ওই শিক্ষিকা দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘আব্দুর রহিমের জন্য স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ঝগড়া করেছি। তার কারণে স্বামীকে তালাক দিয়েছি। তিনি বিয়ে করবেন বলে সময় নিয়ে এখন টালবাহানা করছেন। আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই এর সমাধান চেয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ করেছি।’

অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই মহিলা একজন পাগল। আপনারা পাগলের কথা শুনে রিপোর্ট করলে করেন। ওই শিক্ষিকা খারাপ চরিত্রের নারী। বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে ওই শিক্ষিকা। এটা ষড়যন্ত্র।’

বিষয়টিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ দৈনিক অধিকারকে জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের নামে আগেরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। ওই শিক্ষিকা আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছে।

আরও পড়ুন : দিনাজপুরে অ্যাম্বুলেন্স-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২

তিনি বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার ও নড়িয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আনোয়ার হোসেনকে তদন্ত কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।

অভিযোগের সত্যতা পেলে নিয়ম অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ।

ওডি/আইএইচএন

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড