এসএম রাসেল, মাদারীপুর
মাদারীপুর সদর উপজেলার পৌরসভাধীন ১১১ নম্বর চরমুগরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অলকা রায় ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদ্যালয়টির গত বছরের মে মাসের মাসিক বিবরণীতে উঁচু বেঞ্চ ছিল ১১৫টি, নিচু বেঞ্চ ১২৩টি, চেয়ার ১৮টি, টেবিল ৮টি, আলমারি ৩টি এবং ফ্যান ছিল ২৫টি। অথচ চলতি বছরের জানুয়ারির মাসিক বিবরণীতে উঁচু বেঞ্চের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৬টি, নিচু বেঞ্চ ৬৬টি, টেবিল ৭টি এবং ফ্যান মাত্র ১০টি। মাত্র আট মাসের ব্যবধানে বিদ্যালয়ের ব্যাপক সম্পদ লুটের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
বিষয়টি এরই মধ্যে অভিভাবক ও সচেতন মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারহানা আক্তার বিএড প্রশিক্ষণে থাকাকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি আইয়ুব খান নানা অনিয়ম করে। পরে এ বছরের ১৩ জানুয়ারি ফারহানা আক্তার প্রশিক্ষণ শেষে বিদ্যালয়ে যোগদান করলেও তাকে অজ্ঞাত কারণে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করলেও প্রভাবশালী একটি মহলের ভয়ে প্রধান শিক্ষক ফারহানা আক্তারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়টির তিন বছর মেয়াদি ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। সে অনুযায়ী উপজেলা শিক্ষা অফিসার গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনি তফসিল ঘোষণাও করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি জানাজানি হয় গত বছরের অক্টোবরে মেয়াদ থাকার পরেও অগ্রিম ম্যানেজিং কমিটি করা হয়েছে। সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর রয়েছে। বর্তমান সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে স্নাতক পাস। অথচ ওই কমিটির সভাপতি আইয়ুব খান স্নাতক ডিগ্রিধারী নয় বলে জানা গেছে।
একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অলকা রায় ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আইয়ুব খানের সম্পত্তি আত্মসাতের বিষয়টি আড়াল করতেই প্রধান শিক্ষক ফারহানা আক্তার যোগদানের পরেও দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। এই ঘটনার সাথে খোদ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রাশেদা খাতুন ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোকলেছুর রহমান জড়িত। তারা বিষয়টি জেনেও চুপ রয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরদারি দাবি করছেন অভিভাবকরা।
অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অলকা রায় বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিষেধ করায় প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেইনি। কিছু মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে রাজি নই। আর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আইয়ুব খান সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রাশেদা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
আরও পড়ুন : মাটিরাঙ্গা হত্যাকাণ্ড : গ্রামবাসীর মামলা নিল পুলিশ
এ ব্যাপারে রাশেদা খাতুন জানান, প্রধান শিক্ষক ফারহানা আক্তারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। আর বিদ্যালয়ের মালামাল লোপাটের বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে হবে। বিষয়টি এখনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।
ওডি/জেএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড