• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আনোয়ারায় বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ

  জাহাঙ্গীর আলম, আনোয়ারা, চট্টগ্রাম

০৪ মার্চ ২০২০, ১৪:২৬
সূর্যমুখী ফুল চাষ
সূর্যমুখী ফুলের চাষ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রথমবারের মতো কৃষি জমিতে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। এতে বোরো চাষের চেয়ে অধিক লাভের আশা দেখছেন তারা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে শোলকাটা, বরুমচড়া, বৈরাগ ও ওষখাইন এলাকায় কৃষি জমিতে বোরো চাষের পরিবর্তে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেন কৃষকরা। সূর্যমুখী চাষের ফলে হৃদরোগ প্রতিরোধী তেল, মধু উৎপাদন, সবজির চাহিদা ও দেহের পুষ্টি পূরণে সম্ভাবনাময়ী এই ফুলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকরা এই চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশের সয়াবিন ও সরিষা তেলের ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখবে বলে আশা কৃষিবিদদের।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলে ফুল থেকে তেল, খৈল, মধু, সবজি ও জ্বালানি পাওয়া যায়। প্রতি কেজি বীজ থেকে কমপক্ষে আধা লিটার তৈল উৎপাদন সম্ভব। প্রতি শতক জমিতে ৮ কেজি বীজ উৎপাদন হয়। এতে তেল উৎপাদন হবে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লিটার পর্যন্ত। প্রতি লিটার তেলের সর্বনিম্ন বাজার মূল্য ২৫০ টাকা। প্রতি শতক জমিতে খরচ হয় সর্বোচ্চ ২০০ টাকা। এ বছর উপজেলায় শোলকাটা, বরুমচড়া, বৈরাগ ও ওষখাইন এলাকায় ৮০ শতক জমিতে এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, বোরো চাষ খুব একটা লাভজনক নয়। বোরো চাষ করতে যে পরিমাণ খরচ হয় সেই টাকার ধান পাওয়া যায় না। তাই অন্যান্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী চাষে বেশি লাভের প্রত্যাশা করছেন তারা।

শোলকাটা গ্রামের কৃষক মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমার ২০ শতক জমি সূর্যমুখী আবাদ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬ হাজার টাকা। এই ২০ শতক জমিতে বীজ উৎপন্ন হবে ৪ মণ। এই বীজ থেকে তেল হবে প্রায় ১৪০ লিটার। এতে তেল বিক্রি করতে পারব ৩৫ হাজার টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে আমি আরও ১শ থেকে ১৫০ শতক জমিতে এ ফুল চাষ করব। আমাকে দেখে এলাকার অনেক কৃষক সূর্যমুখী ফুলের চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা ছরোয়ার আলম বলেন, ‘সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন। অলিভ অয়েলের পরেই সূর্যমুখী তেলের অবস্থান। সয়াবিন ও সরিষা ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণ করবে সূর্যমুখী তেল।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, এ বছর প্রথম আনোয়ারায় বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। এই ফসল থেকে হৃদরোগ প্রতিরোধী তেল উৎপাদন ছাড়াও মধু, খাদ্যশস্য ও জ্বালানি পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন : ৬ লাখ রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন ‘দুলাভাই’ খ্যাত ডা. মংফো

‘উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার কারণে ধান চাষ খুব একটা লাভজনক নয়। কিন্তু সূর্যমুখীর ফলন লবণাক্ত জমিতেও ভালো হয়, যার ফলে আমরা কৃষকদের লাভজনক ফসল সূর্যমুখীর আবাদ করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। এবার ৮০ শতক জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী চাষে সেচের দরকার হয় না। আমরা সূর্যমুখী চাষের জন্য কৃষকদের সার ও বীজ প্রণোদনা দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আগামী বছর সূর্যমুখীতে মৌচাক বসিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড