রহমান মৃধা
পিনজিরা এবং আশরাফুলকে আমরা যদি ঝরে পড়তে না দিতে চাই তবে ইমারত বিশ্বাসের ছোট্ট বাড়ি মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা ইউনিয়নের খলিশাখালি গ্রামে যেতে হবে মনের গতিতে।
মনে পড়ে গেল জসীমউদ্দীনের ‘আসমানী’ কবিতার কথা। ‘পেটটি ভরে পায় না খেতে, বুকের ক-খান হাড়, সাক্ষী দিছে অনাহারে কদিন গেছে তার।’
মো. ইমারত বিশ্বাস পেশায় ছিলেন ঘর-মিস্ত্রী। একজনের আয়ে ছয়জনের (বৃদ্ধ পিতা-মাতা, দু’সন্তান এবং স্বামী স্ত্রী) সংসার চলত তাদের। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করেছন ইমারত বিশ্বাস!
চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে নিজের সামান্য যে সহায়-সম্বল ছিল, তা বিক্রি করেছেন মৃত্যুর আগেই। স্বামীর সার্বক্ষণিক পাশে থেকে চিকিৎসা কাজে সহযোগিতা করা এবং অর্থ জোগাড়ের দুশ্চিন্তায় স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে প্যারালাইজডের শিকার হয়েছেন ইমারতের সহধর্মিণী।
একমাত্র ছেলে আশরাফুল (৪র্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া) বিনা চিকিৎসায় প্রায় প্রতিবন্ধীতার পর্যায়ে ধাবমান। অত্যন্ত মেধাবী মেয়ে পিনজিরা (দশম শ্রেণি বিজ্ঞান বিভাগ পড়ুয়া) ভাবছে লেখাপড়া ছেড়ে সংসারের হাল ধরবে।
কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব? এ বয়সে এবং এ শিক্ষায় মিলবে কি কোন কাজ? গার্মেন্টসে ঢুকবে? তাও তো বাড়ি থেকে অনেক দূরে (ঢাকা)। কে দেখবে দাদা-দাদি, প্রতিবন্ধী ভাই এবং পঙ্গু মাকে? এমতাবস্থায় কী করতে পারি আমরা? কী করতে পারে সমাজ, কী করতে পারে সরকার এটাই এখন প্রশ্ন।
সুস্থ্যাবস্থায় পায়ে চালিত সেলাই মেশিনের মাধ্যমে সংসারে অর্থ জোগান দিতেন নাসরিন বেগম (ইমারতের স্ত্রী)। প্যারালাইজডে আক্রান্ত হওয়ার পর সেলাই মেশিন চালান তার পক্ষে অসম্ভব প্রায়।
ইঞ্জিন (ইলেকট্রিক) চালিত সেলাই মেশিন হলে আয়ের চাকা সচল হত পিনজিরাদের। দু’মুঠো খেয়ে পরে বেঁচে থাকতো পিনজিরারা।
সোনার বাংলার আদর্শ ছেলে শাহজাহানের নজরে পড়েছে পরিবারের এই দুর্দশা আর তৎক্ষণাৎ শাহজাহান বিষয়টি তুলে ধরেছে তাঁর ফেসবুকে।
বিষয়টি অত্যন্ত মানবিক বিধায়, রাষ্ট্রীয় কোন সংস্থা, দেশে-বিদেশে অবস্থানরত হৃদয়বান, বিত্তবান মানুষগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং আর্থিকভাবে সহযোগিতা পারে তাদের পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে দিতে।
কিছুদিন আগে ফেসবুকে আমার নজরে পড়েছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি স্ট্যাটমেন্ট।
সেখানে দেখেছিলাম তিনি বলেছেন, “গ্রামে গ্রামে খোঁজ নিতে বলেছি- নদী ভাঙায় যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছে তাদেরকে আমরা ঘর করে দেবো, আর যারা ভূমিহীন, গৃহহীন তাদেরকেও ঘর তৈরি করে দেবো। প্রত্যেকটা মানুষের একটা ঠিকানা হবে। বাংলাদেশের একটা মানুষও যেন গৃহহারা বা গৃহহীন না থাকে।”
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা চলছে। পালিত হবে আর কয়েকদিন পরে। সারা বিশ্ববাসীর সঙ্গে যেন পিনজিরার পরিবারও যোগ দিতে পারে দিনটি পালনের জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সবার কাছে অনুরোধ আসুন পিনজিরাদের পরিবারকে একটু সাহায্য এবং সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেই।
সহযোগিতার মাধ্যম: ০১৭১৪-৮৩৫৮১৯ মো হাবিবুল্লাহ (বিকাশ), ০১৭১৮-৪২৩৫১৬ মো শাহজাহান মিয়া (বিকাশ)।
ওডি/আরএডি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড