• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জেলেদের নির্যাতন করে টাকা আদায়ের অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

  বাগেরহাট প্রতিনিধি

০১ মার্চ ২০২০, ১০:৪২
বাগেরহাট
অভিযোগকারী জেলেরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

সুন্দরবনে জেলেদের হাত ও পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করে বন কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পশ্চিম সুন্দরবনের ভদ্রা ক্যাম্পের ওসি রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জেলেরা।

টাকা দিয়ে ছাড়া পাওয়া নির্যাতনের শিকার জেলেরা বলেন, এর চেয়ে বনের দস্যুরাই ভালো ছিল, যে নির্যাতন বন কর্মকর্তারা করেন জলদস্যুরাও এই নির্যাতন করেন না।

তবে ওসি রবিউল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো জেলেকে আটক করে নির্যাতন করিনি এবং টাকাও নেইনি।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সুন্দরবনে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের ধরে নিয়ে ভদ্রা ক্যাম্পে হাত ও পা বেঁধে পায়ের পাতায় পিটিয়ে জেলে ইয়াসির সর্দারের কাছ থেকে ৩০ হাজার, শ্যামল সর্দারের কাছ থেকে ৩০ হাজার, নির্মল রায়ের কাছ থেকে ৪০ হাজার এবং রমেশের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নেয় ওসি। জলদস্যুদের হাতে জিম্মি আছে বলে এসব জেলেদের বাড়িতে ফোন করিয়ে টাকা নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন জেলেরা। নির্যাতনের শিকার এসব জেলেদের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের সুন্দরতলা, গিলারখালকুল ও খুলনার দাকোপের আমতলা, ঢাংমারীর ভোজনখালী এলাকায়।

জেলে নির্মল, আলমগীর, নুর ইসলাম, বাসুদেব ও আলআমিন বলেন, গত ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই স্টেশন ও ঢাংমারী স্টেশন থেকে বনের অভ্যন্তরের খালে সাদা মাছ ধরার জন্য পাস-পারমিট (বনবিভাগের অনুমতিপত্র) নিয়ে পাঁচটি নৌকাসহ তারা মাছ ধরতে যান। পরে পশ্চিম সুন্দরবনের ভদ্রা ক্যাম্পের ওসি রবিউল এবং ওই ক্যাম্পের ট্রলার মাঝি বাদশা তাদের ১০ জন জেলেকে ধরে নিয়ে ক্যাম্পে আটকে রাখেন। অবৈধভাবে বনের ভেতরে মাছ শিকারের অজুহাত দেখিয়ে তাদের কাছে ওসি রবিউল দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু জেলেরা তাদের বনবিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত পাস-পারমিট দেখালে আরও ক্ষিপ্ত হন ওসি রবিউল। এ সময় জেলেদের পাঁচটি নৌকায় থাকা সাড়ে তিন মণ কোরাল, কাইন ও জাবাসহ কয়েক প্রজাতির সাদা মাছ ওসি রবিউল লুটে নেয় বলেও জেলেরা অভিযোগ করেন।

এ সময় ওই ওসি জেলে আল-আমিন, নির্মল, আলমগীর ও রমেশ রায়কে হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করেন। এক পর্যায়ে জলদস্যুরা তাদের জিম্মি করেছে বলে জেলেদের বাড়িতে ফোন দিতে বলেন ওসি রবিউল। নির্মম নির্যাতনের ভয়ে জেলেরা বাড়ি থেকে বিকাশের মাধ্যমে ওসি রবিউলকে টাকা এনে দেন।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ওসির ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বরে দুপুর ২টা ৩১ মিনিটে ১৫ হাজার এবং ২টা ৩৬ মিনিটে আরেকটি বিকাশ নম্বরে ১২ হাজার ২৫০ টাকা নেন। ওসির চাহিদা অনুযায়ী এক লাখ ৩০ হাজার টাকার বাকি টাকা ভদ্রা ক্যাম্পের ট্রলার মাঝি বাদশার স্ত্রীর মাধ্যমে নেন বলেও জেলেরা জানান। এ ঘটনায় জেলেরা বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

আরও পড়ুন : পাবনায় বইমেলার পর্দা নামল

জেলেদের আটকিয়ে ওসি রবিউল ইসলামের নির্যাতন ও টাকা নেওয়ার বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো মঈনউদ্দিন খাঁন বলেন, বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম সুন্দরবন বিভাগের ডিএফওকে (বিভাগীয় বন কর্মকর্তা) তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

ওডি/জেএস

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড