চন্দনাইশ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার ৯১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ শেষে ২টায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সরেজমিন পরিদর্শনে উপজেলার দোহাজারী পৌরসভাস্থ রায়জোয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়ের কক্ষে জাতীয় নির্বাচনের আদলে বসানো হয়েছে দুইটি গোপন বুথ। ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে প্রার্থীদের নামে। তৃতীয় শ্রেণি থেকে পাঁচজন, চতুর্থ শ্রেণি থেকে চারজন ও পঞ্চম শ্রেণি থেকে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর আগে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করে লিফলেট, পোস্টার ছাপানোর পাশাপাশি ক্যাম্পেইনও করেছেন তারা।
রবিবার নির্ধারিত সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেটে ক্ষুদে ভোটাররা দাঁড়িয়েছে লম্বা লাইনে। ক্ষুদে আনসার সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা ভোটারদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। এভাবে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে যারা ভোট দিতে দাঁড়িয়েছে তারা বিদ্যালয়েরই তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রী।
ভোটারদের আঙ্গুলে দেওয়া হচ্ছে অমোচনীয় কালির ছাপ। বিদ্যালয়টির ১৮৯ জন ক্ষুদে ভোটারের ভোটেই নির্বাচিত হবে বিদ্যালয়টির স্টুডেন্ট কাউন্সিলের সাত প্রতিনিধি।
বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক তাহেরা বেগম জানান, ‘ক্ষুদে ভোটারদের ভোটগ্রহণের জন্য ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। এজন্য আগে থেকেই তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে একজন নির্বাচনি প্রিজাইডিং অফিসার, দুইজন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, চারজন পোলিং অফিসার, চারজন পোলিং এজেন্ট, চারজন আনসার ও দুইজন স্বেচ্ছাসেবক।
৬৪ জন ছাত্র ও ১২৫ জন ছাত্রীর প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে সাতজন কাউন্সিলর। এ সাত কাউন্সিলরের নেতৃত্বেই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা পরবর্তীকালে তাদের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
ভোট দেওয়া শেষে একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলাপকালে তারা জানায়, বড়দের মতো তারাও নির্বাচনের মাধ্যমে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করছে। এ প্রতিনিধিরাই স্কুলে তাদের সুবিধা-অসুবিধার দেখভাল করবে। জীবনের প্রথম ভোট দিতে পেরে তারা খুবই খুশি।
দুপুর ২টায় নির্বাচনি ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হৃদয়। ১৮৯ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে ১৩০ ভোট। তিনটি ভোট বাতিল করা হয়েছে। প্রাপ্ত ফলাফলে তৃতীয় শ্রেণি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আবতাহী ইরেশ (প্রাপ্ত ভোট ৭০) ও বোরাক নুর তান্নি (প্রাপ্ত ভোট ৬৫)। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রুমানা (প্রাপ্ত ভোট ৫৯), তানভীর (প্রাপ্ত ভোট ৪২) ও শাহীন (প্রাপ্ত ভোট ৩৮)।
চতুর্থ শ্রেণী থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মুনমুন আক্তার (প্রাপ্ত ভোট ৭৮) ও মো. রাকিব উদ্দীন (প্রাপ্ত ভোট ৬১)। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সায়মন (প্রাপ্ত ভোট ৪৫) ও নাদিয়া (প্রাপ্ত ভোট ৪৩)।
পঞ্চম শ্রেণি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ঝুমা আক্তার (প্রাপ্ত ভোট ৭৬), রবিউল হাসান রিফাত (প্রাপ্ত ভোট ৬৬) ও নুরুল আবচার (প্রাপ্ত ভোট ৬৬)। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রুম্মান (প্রাপ্ত ভোট ৫১) ও মীম (প্রাপ্ত ভোট ৪৮)। বিজয়ের অনুভূতি জানতে চাইলে নির্বাচিতরা বলেন, ‘বৃক্ষরোপণ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ বিভিন্ন কাজে স্যার ও ম্যাডামদের (শিক্ষকদের) সহযোগিতা করব। ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যায় সহযোগিতা করব।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক টিংকু কান্তি দাশ জানান, ‘এ নির্বাচনের মাধ্যমে কোমলমতি শিশুদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনা সৃষ্টি হবে। তাদের মধ্যে নেতৃত্বের বিকাশ ও পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতা তৈরি হবে। এতে শিশুদের মনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
আরও পড়ুন : সোনারগাঁয়ে স্কুলব্যাগ বিতরণ করেন চেয়ারম্যান জিন্নাহ
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে সারাদেশের ১৯টি জেলার ২০ উপজেলার ১০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠন করা হয়।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড