• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধান ছেড়ে তামাক চাষে ঝুঁকছে কৃষক

  রফিকুল ইসলাম রফিক, গাইবান্ধা

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৮:৪০
তামাক
তামাকখেত (ছবি : দৈনিক অধিকার)

গাইবান্ধায় এবারো ব্যাপক তামাকের আবাদ হয়েছে। কোম্পানিগুলোর দেওয়া বিভিন্ন সুযোগ সুবিধায় দিন দিন কৃষকরা ঝুঁকছেন তামাক চাষে। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি, মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বিশাল এলাকা জুড়ে তামাকের ব্যাপক চাষ হয়েছে। অথচ এ তিন উপজেলায় ধান, পাট, ডাল, গমসহ নানা জাতের খাদ্যশস্য লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হতো। যা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হতো।

পলাশবাড়ী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জানান, এ উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের করতোয়া নদীর চর দিয়ে কিছু কৃষক তামাক চাষ করেছে। যা পূর্বের তুলনায় অনেক কম।

তিনি আরও জানান, উপজেলায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটিবি), ঢাকা টোব্যাকো, আবুল খায়ের টোব্যাকোসহ বিভিন্ন কোম্পানি এলাকায় তামাক শিল্প গড়ে তুলেছে। তারা চাষিদের মধ্যে সার, বীজ ও কীটনাশকসহ নানা উপকরণ দিয়ে আসছে।

এ দিকে চাষিরা জানান, ধানসহ অন্যান্য ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া এবং কোম্পানিগুলোর দেওয়া প্রণোদনার কারণে তামাক চাষে ঝুঁকছে এলাকার অনেক কৃষক। কোম্পানিগুলো অগ্রিম ঋণ, সার, বীজ, ক্রয়ের নিশ্চয়তা এবং অধিক লাভের আশায় চাষিরা তামাকের আবাদ করে।

কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের তামাক চাষি জাহিদুল ইসলাম বলেন, তামাক চাষ নিষিদ্ধ হলেও আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছে কোম্পানিগুলো। স্বল্প খরচে অধিক লাভ।

দুলা মিয়া জানান, ধান, পাট ও আখসহ বিভিন্ন জাতের ফসল করে তার ন্যায্য মূল্য আমরা পাই না। এমনকি উৎপাদন খরচটা তুলতে পানি না। কোম্পানি আমাদের বীজ দেয় মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে তারা তামাক কিনে নিয়ে যায়।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার তামাকের আবাদ অনেক কম হয়েছে। তিন উপজেলার মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ৯ হেক্টর এবং পলাশবাড়ীতে ১ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান জানান, তামাক চাষিদের বিকল্প ফসলের আবাদ করতে বিভিন্নভাবে তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এছাড়া তামাক চাষের বিভিন্ন ক্ষতির দিকগুলো তুলে ধরে তাদের নিরুৎসাহিতসহ সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। তবে কোম্পানিগুলোর নানা প্রণোদনা দেওয়ার পরও জেলায় এবার কম তামাক চাষ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকরা সচেতন হলে তামাক চাষ অনেকটা কমে আসবে।

আরও পড়ুন : ১৫ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৩, আহত ৮৯

গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ জানান, তামাক একটি নিষিদ্ধ ফসল। এটি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং মানুষের ব্যাপক ক্ষতি করে। তামাক চাষ ও সেবনে মানবদেহের ফুসফুস, হার্ট, কিডনিসহ স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি করে। সুস্থ জীবন গড়তে তামাক চাষ বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে চাষিদের বিকল্প ফসল ফলাতে উৎসাহিত করতে হবে।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড