নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জে থানা থেকে আসামিকে জোরপূর্বক ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির। পরে থানায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় এ ঘটনা ঘটে।
থানায় টানা পাঁচ ঘণ্টা আটক থাকার পর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সামনে নিজের ভুল স্বীকার করে মুচলেকার মাধ্যমে মুক্তি পান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির। এর আগে বুধবার রাতে ফাতেমা মনিরের বডিগার্ড হিসেবে পরিচিত বেলীসহ আরেকজন নারীকে পুলিশ আটক করে। দুই নারীকে ছাড়িয়ে নিতে বৃহস্পতিবার সকালে থানার কম্পাউন্ডের ভেতরেই ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির ওই ঘটনা ঘটান।
থানা সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে ফতুল্লার আলীগঞ্জ থেকে দুই নারীকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির থানায় উপস্থিত হন। এ সময় তিনি লকাপে থাকা নারীদের থানা থেকে ছেড়ে দিতে থানার ভেতরেই হৈচৈ শুরু করেন। তার হৈচৈ শুনে থানার লকাপের সামনে আসেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজগর আলী। তিনি এ সময় ফাতেমা মনিরকে শান্ত হতে বলেন। কিন্তু তিনি শান্ত না হয়ে আসামিকে তাৎক্ষণিক ছেড়ে দিতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। এ ঘটনার পরপরই ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আসলাম হোসেন থানায় এসে ফাতেমা মনিরকে তার রুমে বসতে বলেন। কিন্তু ফাতেমা মনির ওসির কথায় শান্ত না হয়ে থানা কম্পউন্ডের ভেতরেই চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। একপর্যায়ে অফিসার ইনচার্জ আসলাম হোসেন ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনিরকে আটকের নির্দেশ দেন। এ সময় তার সঙ্গে আরও ২-৩ জন নারী নেত্রীকেও আটক করে রাখা হয়।
অন্যদিকে, বিকাল ৪টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানায় আসেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফ উল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আসাদুজ্জামান। সেখানে তাদের সামনে ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির নিজের ভুল স্বীকার করার পর মুচলেকার মাধ্যমে তিনি থানা থেকে মুক্তি পান।
কয়েক মাস আগে ফতুল্লার পাগলা নয়ামাটি এলাকার মোস্তফার স্ত্রী রোকসানার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা ফাতেমা মনিরের বডিগার্ড বেলীর স্বামী হীরা ঋণ নিয়েছিল। সেই টাকা এক সপ্তাহের মধ্যে রোকসানাকে ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তা ফেরত দিতে হীরা ও বেলী গড়িমসি শুরু করে। গত ২৬ জানুয়ারি রোকসানার স্বামীকে টাকা নেওয়ার জন্য নয়ামাটি এলাকার বাসায় ডেকে নেয় হিরা। মোস্তফা পাওনা টাকা নিতে হীরার বাসায় যাওয়ার পরপরই তাকে পিটিয়ে আহত করে হীরা, বেলী, দিপু ও মিরাজসহ বেশ কয়েকজন। পরে আহত মোস্তফা সুস্থ হওয়ার পর রোকসানা বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় বুধবার একটি লিখিত আভিযোগ দেন। পুলিশ রাতেই নয়ামাটি থেকে হিরা ও তার স্ত্রী বেলীকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেপ্তারকৃতদের থানা থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নিতে থানার লকাপের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির।
আরও পড়ুন: সেনা কর্মকর্তাকে কুপিয়ে হত্যা করল ছেলে
এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম হোসেন জানান, থানা থেকে আসামিকে ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তাই তাকে আটক করা হয়েছিল। ভবিষ্যৎতে তিনি এমন কাজ করবেন না এমন মুচলেকার মাধ্যমে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড