কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফে সেন্ট মার্টিনের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে গত মঙ্গলবার ভোরে ডুবে যাওয়া ট্রলারটিতে মালয়েশিয়াগামী যাত্রী ছিল ১৩৮ জন। এদের অধিকাংশই উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরের রোহিঙ্গা নাগরিক। দুর্ঘটনার শিকার ট্রলারের যাত্রীদের মধ্যে ওই দিন ৭২ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে একজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। এ নিয়ে এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা ট্রলার ট্র্যাজেডির ৭৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে মালয়েশিয়াগামী ডুবে যাওয়া ট্রলারের অধিকাংশ যাত্রীদের জীবিত উদ্ধার করতে প্রথম কার্যকর ভূমিকাটি রেখেছে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯। ট্রলারে থাকা এক যাত্রীর কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাহায্যের আকুতি পেয়ে ৯৯৯ ডেস্ক থেকে দ্রুত বিষয়টি টেকনাফ স্টেশন কোস্টগার্ডকে অবহিত করা হয়। পরে খবর পেয়ে কোস্টগার্ড দ্রুত উদ্ধার অভিযানে নামে।
জানা যায়, মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলারটিতে যাত্রী ছিল উখিয়া উপজেলার বাসিন্দা মো. আব্দুল (২৮)। নিশ্চিত দুর্ঘটনার আলামত উপলব্ধি করে তিনি সরকারের জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দেন। সেখান থেকে তাকে কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশন কমান্ডারের ফোন নাম্বার দিয়ে বিষয়টি তড়িৎ গতিতে তাকে জানানোর জন্য বলা হয়। পরে ট্রলারের যাত্রী আব্দুল কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সোহেল রানাকে জানায়। কোস্টগার্ড কর্মকর্তা আব্দুলের ফোন পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালায়।
জাতীয় জরুরি সেবা গ্রহীতা আব্দুল বলেন, বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালী এলাকা থেকে আমাদের নিয়ে মাঝ সাগরে মালয়েশিয়াগামী বড় জাহাজের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল একটি মাছ ধরার ট্রলার। ট্রলারটি মঙ্গলবার ভোরের দিকে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হলে আমি তাৎক্ষণিক জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করি। ফোন পেয়ে তারা আমাকে কোস্টগার্ডের সঙ্গে সংযোগ করে দেন এবং পরবর্তীতে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সোহেল রানা জানান, ট্রলারের এক যাত্রী ৯৯৯ এ ফোন করে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানায়। এছাড়া ৯৯৯ থেকে আমাকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। বিষয়টি জানার পর দ্রুত টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিন কোস্টগার্ডের কয়েকটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করি। সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ছিল দুর্ঘটনার শিকার যাত্রীদের জীবিত উদ্ধার করতে।
আরও পড়ুন : বোনকে হারিয়েও বিশ্বজয় আকবরের
তিনি জানান, দুর্ঘটনার শিকার মালয়েশিয়াগামী ট্রলার থেকে ১৫ জনের মৃতদেহ, ৭৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১২ জন রোহিঙ্গা নারী ও তিনজন শিশু ছিল। এছাড়া জীবিত উদ্ধার রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৪৮ জন নারী, চারজন দালালসহ ২১ জন পুরুষ এবং চারজন শিশু ছিল।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড