খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলায় আলোচিত মাহেন্দ্রচালক ফারুক (২০) হত্যাকাণ্ডের সাত দিনের মাথায় হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
মাহেন্দ্র ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই তাকে খুন করা হয়েছে বলে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মো. মাসুম (২৮)।
এর আগে ফারুক হত্যার পাঁচ দিনের মাথায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকালের দিকে রাঙ্গামাটির লংগদু এলাকা থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার মাসুম লংগদু উপজেলার ইয়াংছড়ির এলাকার মো. আবদুস ছাত্তারের ছেলে।
গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পরবর্তীকালে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকা থেকে হত্যায় জড়িত মো. হামিদুল ইসলাম ওরফে সাইদুল ও ফরিদ হোসেন নামে আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে ছিনতাই হওয়া মাহেন্দ্রটিও উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এ সময় হত্যার দায় স্বীকার করায় মূল পরিকল্পনাকারী মাসুমসহ ওই তিনজনকে খাগড়াছড়ি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সামিউল আলম কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করে।
সংবাদ সম্মেলনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহনুর আলম বলেন, ‘আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।’
এর আগে আদালতে দেওয়া আসামিদের জবানবন্দির বরাতে পুলিশ জানায়, মাহেন্দ্র ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে রাঙ্গামাটির লংগদু এলাকার বাসিন্দা মো. মাসুম, একই উপজেলার করল্যাছড়ির বাসিন্দা মো. আবু মুছা ও তার স্ত্রী শাহনাজ আক্তার গত ১ ফেব্রুয়ারি ফারুকের মাহেন্দ্রটি রিজার্ভ করেন। এরপর তারা খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরে বেড়ায়।
ওই দিন সন্ধ্যায় তাদের আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে পুনরায় মানিকছড়ি নামিয়ে দিয়ে আসার কথা ছিল ফারুকের। একপর্যায়ে মানিকছড়ি যাওয়ার পথে মাটিরাঙ্গার অদূরে ১০ নম্বর এলাকায় আসলে ব্যক্তিগত কাজের কথা বলে মাহেন্দ্রটি থামায় আসামিরা। এ সময় কৌশলে আসামিরা শ্বাসরোধ করে ফারুককে হত্যা করে লাশ ফেলে মাহেন্দ্র নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে আসামিরা পূর্ব পরিচিত গ্যারেজ মেকানিক মো. শাকিলের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার মো. হামিদুল ইসলাম ওরফে সাইদুল ও ফরিদ হোসেনের কাছে মাহেন্দ্রটি এক লাখ টাকায় বিক্রয় করে।
মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দিন ভুঁইয়া দৈনিক অধিকারকে জানান, খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দিক নির্দেশনায় তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাঙ্গামাটির লংগদু ও চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকা থেকে হত্যায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া মাহেন্দ্রটিও উদ্ধার করা হয়। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার করল্যাছড়ির বাসিন্দা মো. আবু মুছা ও তার স্ত্রী শাহনাজ আক্তারকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : আগুনে পুড়েই জীবন গেল ঘুমন্ত শিশুর
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার অদূরে ১০ নম্বর এলাকায় মো. ফারুক (২০) নামে এক মাহেন্দ্র চালককে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
নিহত মো. ফারুক খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার চোংড়াছড়ি এলাকার মৃত শাহ আলমের ছেলে।
ঘটনার পরদিন রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মাটিরাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড