মো. অসীম, খুলনা
ভ্যান গাড়িতে আছে মিটার, বিদ্যুতের তারসহ অন্য সরঞ্জাম। সঙ্গে আছেন লাইনম্যান ও ওয়ারিং পরিদর্শক। প্রতিদিন সকাল থেকে খুলনার দাকোপ উপজেলার গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন তারা। গ্রাহক বিদ্যুৎ নিতে চাইলে মাত্র পাঁচ মিনিটেই পেয়ে যাবেন সংযোগ। কোনো হয়রানি নেই, দিতে হবে না কোনো বাড়তি অর্থ।
ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আলোর ফেরিওয়ালা’। আর এর উদ্যোক্তা খুলনা পল্লী বিদ্যুতের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আলতাফ হোসেন। তিনি জানান, ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম গোটা খুলনা জেলায় সব বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ না পৌঁছানো পর্যন্ত চলবে। শুরুর পর থেকেই অনেক জায়গায় নতুন সংযোগ দিয়েছেন।
খুলনা জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে একটি উপজেলা দাকোপ। নয়টি ইউনিয়নের এই উপজেলায় ১০৬টি গ্রাম রয়েছে, যেখানে প্রায় ৩ লাখ মানুষের বসবাস। এখানে প্রতিদিনই নতুন সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে।
খুলনা পল্লী বিদ্যুতের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আলতাফ হোসেন জানান, দেশে এখনো বিদ্যুৎ নিতে গিয়ে গ্রাহকরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। একটা সংযোগের জন্য দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। অনেক সময় বাড়তি পয়সাও খরচ হয়ে যায়, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তিনি জানান, এই অবস্থা দেখে তার প্রায়ই খারাপ লাগত। তাছাড়া সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে। সেই জায়গায় গ্রাহক হয়রানির শিকার হবেন, এটা হতে পারে না। তাই তিনি বিকল্প উদ্যোগ নেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন সংযোগ কীভাবে দেওয়া যায়, সেই পরিকল্পনা নেন। সেই পরিকল্পনা থেকে ভ্যান গাড়িতে করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। এটাকে তিনি ‘আলোর ফেরিওয়ালা, পল্লী বিদ্যুৎ দুয়ার মিটারিং কার্যক্রম’ নাম দিয়েছেন। ওই নামেই চলছে তার এই কার্যক্রম।
খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার বারইখালি গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে নতুন সংযোগ পাওয়া সোনা বানু বেগম জানান, পল্লী বিদ্যুতের এই কার্যক্রম তাদের অনেক সুবিধা এনে দিয়েছে। সংযোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে ধরনা দিতে হচ্ছে না। টাকা জমা দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানো লাগছে না। দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে না। মাত্র পাঁচ মিনিটেই নতুন সংযোগ পেয়ে যাচ্ছেন, যা এর আগে ভাবতেও পারেননি তারা।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভ্যানে মিটার, তার থেকে শুরু করে সব ধরনের সরঞ্জাম থাকছে। দুজন লাইনম্যান ও একজন ওয্যারিং পরিদর্শক থাকছেন ওই ভ্যানে। তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। যে এলাকার বাসাবাড়িতে এখনো বিদ্যুৎ নেই, সেই এলাকায় বেশি যাচ্ছেন, সেখানে মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। যারা নতুন সংযোগ নিতে আগ্রহী, ওয়ারিং পরিদর্শক ওয়ারিং যাচাই করে ঠিক আছে জানালেই সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পল্লী বিদ্যুতের লোকজন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর কারণে পুরনো গ্রাহকদের কোনো সমস্যা থাকলে সেটাও দ্রুত ঠিক করে নিতে পারছেন তারা।
আরও পড়ুন : ঝিনাইদহে সড়কে প্রাণ গেল স্কুল শিক্ষকের
খুলনার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) উৎপল মন্ডল জানান, সারা দেশের ন্যায় খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি যে কর্মসূচি নিয়েছে, তা অনুকরণীয়।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড