মো. হেলাল হোসন, মাগুরা
এখন সরিষার মৌসুম। মাগুরার মৌচাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন মধু সংগ্রহের কাজে। জেলার সর্বত্র সরিষার ক্ষেতে মৌচাষিদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। মৌ চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরিষা ফুলের ভালো পরাগায়ন হবে। ফলে এবার জেলায় সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
মাগুরা জেলায় এবার ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। জেলার প্রায় ২ শতাধিক মানুষ মৌচাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। চাষিদের ধারণা এবার জেলায় প্রায় ২০০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকার বেশি। এ চাষকে আরও সম্প্রসারিত করতে পারলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও মধু রপ্তানি করা সম্ভব। নানান জাতের মাছি থাকলেও সাধারণত বাণিজ্যিকভাবে আফ্রিকান মেলি ফ্রা জাতের মৌমাছি এখন বেশি চাষ হচ্ছে। কারণ এরা পরিমাণে অনেক বেশি মধু সংগ্রহ করতে পারে। বিভিন্ন ফুল থেকে বছরের প্রায় ৮ মাস চাষিরা মধু সংগ্রহ করে থাকে।
চাষিরা জানান, সরিষা মৌসুমে বেশি মধু উৎপাদন হওয়ায় উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে অনেক কম দামে মধু বিক্রয় করতে বাধ্য হন তারা। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে সাধারণত মৌ মাছির নানা বিধ রোগ ব্যাধি হয়ে থাকে। ফলে প্রচুর মাছি মারা যায়। এ ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে তারা কোনো পরামর্শ বা সহযোগিতা পান না। চাষিদের তখন নিজস্ব ধারণা থেকে মৌমাছিকে বাঁচিয়ে রাখার নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয়।
খামারিদের দাবি স্থানীয়ভাবে পরামর্শ পাওয়া যায় এমন সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সহজ শর্তে সুদবিহীন ঋণ সুবিধা পেলে আরও অনেক বেকার যুবক এ পেশায় এগিয়ে আসবে। বিসিক ইতোমধ্যে ১২টি ব্যাচে প্রায় ১৬৮ জন নারী-পুরুষকে মৌচাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে মৌ চাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে।
তেঘোরিয়া গ্রামের মৌচাষি মিলন হোসেন বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরে এই মধু চাষ করে আসতেছি। ১৫০টি মৌ বক্সে মৌচাষ করে খরচ বাদ দিয়ে বছরের আমার প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা লাভ হয়।’
বর্তমান সময়ে মধু চাষ একটি লাভজনক পেশা হওয়াতে এর প্রতি ঝুঁকে যাচ্ছেন অনেক তরুণ বেকার যুবক। মূলত মধু চাষে সময় ও শ্রম কম লাগে বিধায় দিনে দিনে এই চাষের চাহিদা বাড়ছে।
মৌসুম অনুযায়ী মধু চাষ হয়ে থাকে। মূলত বর্ষা মৌসুম ছাড়া সারা বছরই এই মধু চাষ হয়ে থাকে। তার মধ্যে সরিষার ফুল, ধনিয়ারা ফুল, কালো জিরা এবং বিভিন্ন বন জঙ্গল থেকে বনজ ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকে মৌচাষিরা।
আরও পড়ুন : ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান সংঘর্ষে ঝরল ৩ প্রাণ
সরিষা ফুলের মধু চাষ সর্ম্পেকে বর্তমান অবস্থা জানতে চাওয়া হলে মাগুরা বিসিকের উপব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম জানান, আমরা নিয়মিত ব্যাচে মৌচাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। কোনো ধরনের সমস্যা হলে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাষিদের সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার মৌচাষির সংখ্যা বেড়েছে। আমাদের মোট নিবন্ধিত খামারির সংখ্যা ২৪ জন। নিবন্ধিত ছাড়াও অনেকেই এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত আছেন। বিসিক থেকে তাদের সকল প্রকার সাহায্য সহযোগিতা আমরা করে থাকি।
ওডি/জেএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড