এস এম ইউসুফ আলী, ফেনী
ফেনীতে প্রতি টন ধান বিক্রি করতে কৃষককে ৫শ টাকা করে ঘুষ দিতে হচ্ছে। আর মিল থেকে ধান সংগ্রহের নিয়ম থাকলেও তা না মেনে একটি এজেন্সি থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে ফেনী জেলায় ৬ হাজার ৮৯৪ মেট্রিক টন ধান এবং ৮৭৩ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ হিসাবে ফেনী সদর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৭শ ১১ মেট্রিক টন।
প্রতি কৃষক থেকে ১ টন করে ধান সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চাতালকল থেকে সংগ্রহের নিয়ম থাকলেও তা সংগ্রহ করা হয় একটি রাইস এজেন্সি থেকে। সিদ্ধ চাল ৩৬ টাকা ও আতপ চাল ক্রয় করা হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহ করা হবে।
কৃষকরা জানান, ধান সংগ্রহে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে নানাভাবে হয়রানি হতে হচ্ছে তাদের।
এছাড়া, সদর উপজেলার কসকা অটো রাইস মিল, জাহিদ অটো রাইস মিল, ছাগলনাইয়া উপজেলার শাপলা অটো রাইস মিল, দাগনভূঞা উপজেলার মেসার্স নাছের অটো মিলস ও পরশুরাম উপজেলার দৌলত অটো রাইস মিল থেকে চাল সংগ্রহ করার চুক্তি থাকলেও তা সংগ্রহ হচ্ছে ভিন্নভাবে। তাছাড়া, গ্রাম থেকে আসা কৃষকরা কর্মকর্তাকে চাহিদা মতো টাকা দিতে অপারগ হলে নানা অজুহাতে ফেরত দেওয়া হয় ধান। এতে করে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে কৃষকদের।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক কৃষক জানান, গুদামে ধান নিয়ে আসলে হিমশিম খেতে হয় প্রতিনিয়ত। অফিসারদের খুশি করতে না পারলে ধান ফেরত নিয়ে চলে যেতে হয়। টাকা দিয়ে অফিসারদের ম্যানেজ করেই ধান গুদামজাত করতে হয়। এসব বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে চাইলে তাদের আইডি কার্ডও বাতিলের হুমকি দেন ওই অসাধু কর্মকর্তারা।
ফেনী সদর উপজেলা গুদাম ইনচার্জ মো. শাহীন মিয়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, প্রতি বস্তা ধানের জন্য সরকারিভাবে শ্রমিকের মজুরি দেওয়া হয় এক টাকা হারে। প্রতি কৃষক থেকে প্রতি বস্তার অনুকূলে ২০ টাকা আদায় করা হয়। প্রতি বস্তা ২০ টাকা হারে টন প্রতি ৫শ টাকা কৃষক থেকে নেওয়া হয়। তবে, প্রতি কৃষক থেকে ধানের অনুকূলে টাকা আদায় করার বিষয়টি সঠিক নয় বলে তার দাবি।
জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু জানান, ৪০ কেজি ধানের অনুকূলে মিলার ২৮ কেজি চাল দেয়। তাই ধানের গুণগতমান ভালো না থাকলে মিলার ধান গ্রহণ করতে চায় না। তাই কৃষকদের সরবরাহকৃত ধান যাচাই-বাছাই করেই নেওয়া হয়। কোনো কৃষককে হয়রানি করা হয় না।
আরও পড়ুন : ঠাকুরগাঁওয়ে একই স্থানে আ. লীগ-বিএনপির সভা, ১৪৪ ধারা জারি
ফেনী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) শহীদ উদ্দিন মাহমুদ জানান, ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু কৃষক অভিযোগ করতেই পারেন। তবে নিয়ম মেনেই ধান ও চাল মজুদ করতে চেষ্টা করি।
ওডি/জেএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড