• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

‘কার কাছে গেলে হামার একটা কার্ড হবে’

  কাজী কামাল হোসেন

  নওগাঁ

২১ জানুয়ারি ২০২০, ১১:৫৭
নওগাঁ
আবিয়া বেওয়া (ছবি : দৈনিক অধিকার)

আবিয়া বেওয়ার বয়স ৯০ বছরের কাছাকাছি। তারপরও পাননি বিধবা কিংবা বয়স্ক ভাতার কার্ড। এই বিধবা বৃদ্ধা বয়সে অর্থের অভাবে নানা সংকটে ভুগছেন। বয়সের ভারে রোগ–শোকে তিনি ভারাক্রান্ত।

নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের গনেশপুর গ্রামের মৃত আছির উদ্দিন মোল্লার স্ত্রী আবিয়া বেওয়া। এই বৃদ্ধ বয়সে বেঁচে থাকার জন্য তিনি একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য ঘুরছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্বারে দ্বারে। শুধু আশ্বাসই মেলে, ৩ বছর ঘুরেও কেউ তার জন্য একটি ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করে দেননি।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বয়স্ক ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীর বয়স সর্বনিম্ন ৬২ আর পুরুষের বয়স সর্বনিম্ন ৬৫ বছর। সে অনুযায়ী আবিয়া বেওয়া বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্য হলেও কেউ তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।

প্রতিবেশীরা জানান, প্রায় এক যুগেরও বেশি আগে অর্থসংকটের কারণে চিকিৎসার অভাবে স্বামী আছির উদ্দিন মোল্লা মারা যান। গরীব স্বামীর সঞ্চয় বলতে কিছুই ছিল না। ১৯৭১ সালের আগে জন্ম নেওয়া ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে বড় সন্তান এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে মারা গেছে প্রায় ২ যুগ আগে।

এক সময় কাজ করার সক্ষমতা হারিয়ে আবিয়া ছাগল পালনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু বয়সের ভারে আর তেমন কাজ করতে পারেন না। এখন বয়সের ভারে শরীর আর আগের মতো চলে না। তাই মাঝে মধ্যেই তাকে না খেয়ে থাকতে হয়।

আবিয়া বেওয়া জানিয়েছেন, ২ বছর আগে তিনি চেয়ারম্যানকে তার ছবি এবং আইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়েছিলেন। অফিস থেকে বলা হয়েছিল যে তার কাজ হয়ে গেছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই টাকা পাবেন। একবছর পরেও কোনো টাকা না পেয়ে পুনরায় ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করা হলে চেয়ারম্যান আবারও কাগজ চাইলে তিনি সেবারও কাগজ দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন ২ বছর পেরিয়ে ৩ বছর হতে চললো তবুও তার কার্ড হয়নি।

বৃদ্ধা আবিয়া বলেন, ‘ হামার বয়স এখন পোরায় ৯০। ৩ বছর থাকা হামি মেম্বার চিয়ামিনের (চেয়ারম্যান) কাছে ঘোরোচি। কোনো কাম হয়নি। কেউ হামার জন্য কিছু করে নাই।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'কত বছর বয়াস হলে কার্ড হয়?' ‘কার কাছে গেলে হামার একটা কার্ড হবে? হামার জন্য একটি কার্ডের ব্যবস্থা করে দেন, বুড়ো বয়াসে আমি এনা শান্তি পাই। আল্লাহ তোমাকের ভালো করবে।’

এত বছর বয়সেও তার কোনো প্রকার ভাতা কার্ড হয়নি কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে গনেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হানিফ উদ্দিন মন্ডল বলেন, 'আবিয়ার কোনো কার্ড করা হয়নি। তবে তার আইডি কার্ডের ফটোকপির উল্টো দিকে আপনি একটা স্বাক্ষর করে দিলে আমি তার একটা কার্ড করে দেব।'

আরও পড়ুন : পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, আবিয়া বেওয়া মান্দা উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে আবেদন করলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওডি/জেএস

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড