• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সোনারগাঁয়ে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ ও রস

  নজরুল ইসলাম শুভ, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ

১৭ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:৪৪
খেজুর গাছে গাছি
খেজুর গাছে গাছি ( ছবি : দৈনিক অধিকার )

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত, এই ইউনিয়নে ১০-২০ বছর আগেও শীতের মৌসুমে সকালে রসের হাড়ি ও খেজুর গাছ কাটার সরঞ্জামসহ গাছির ব্যস্ততার দৃশ্য চোখে পড়ত। সকালে গাছিরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফেরি করে খেজুরের রস বিক্রি করত।

শীতের সকালে আবছা আলোয় প্রকৃতি থাকে ভেজা, এক চুমুক খেজুরের রস প্রাণকে করে তাজা। ঋতু বৈচিত্রের পালাক্রমে চলছে শীত। নানা রকম খাবার, ফুল-ফল, সবজি ও পিঠাপুলির আমেজ নিয়ে হাজির হয় শীতকাল। শীতকালীন খাদ্য তালিকায় প্রথমেই আসে অতিপ্রিয় খেজুরের রস। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গাছির অভাবে সেই মুখোরোচক খেজুর রস এখন বিলুপ্তির পথে। গ্রাম বাংলার এই দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। খেজুর গাছের ব্যাপক নিধনের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো সোনারগাঁয়ের আশপাশের ইউনিয়নে কমছে খেজুর গাছ।

তবে এখনো কিছু খেজুর গাছ থাকলেও গাছির সঙ্কটে রস সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। কয়েক গ্রামের ব্যবধানে ২-১ জন গাছি পাওয়া গেলেও গাছ তুলনামূলক কম থাকায় রস সংগ্রহের কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছে না। ফলে সোনারগাঁয়ে খেজুরের রসের দাম আকাশ ছোয়া। সুস্বাদু এই প্রাকৃতিক খেজুরের রসের স্বাদ নিতে প্রতি কেজি ২শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী খেজুর রসের খির পুলি পিঠা রসের মন্ডামিঠাইসহ নানা মুখরোচক খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নতুন প্রজন্ম।

গাছি লিটন সরদার জানান, বাংলা আশ্বিন মাস থেকে সাধারণত রস সংগ্রহ শুরু হয়। তবে পৌষ ও মাঘ মাসে সবচেয়ে বেশি রস পাওয়া যায়। কারণ এই দুই মাসে শীতের প্রকোপ থাকে সবচেয়ে বেশি। আবহাওয়া যত ঠান্ডা থাকে রসও তত বেশি পাওয়া যায়। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে আর রসও কমতে থাকে। একটি খেজুর গাছ রস দেওয়ার মতো উপযুক্ত হতে ১০-১৫ বছর লাগে এবং ২৫ বছর পর্যন্ত রস দিয়ে থাকে। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছ থেকে দৈনিক ১০-১২ লিটার রস পাওয়া যায়। তবে খেজুর রসের পরিমাণ গাছ ছিলার কৌশল ও যত্নের ওপর অনেকটা নির্ভর করে।

আরও পড়ুন: কাপড়ের রং দিয়ে খাবার তৈরি

সনমান্দী ইউনিয়নের কৃষক ফরিদ বলেন, এক সময় শীতের সকালে সূর্য ওঠার আগেই গাছিরা গাছ থেকে রসের হাড়ি নামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ত। রস নিয়ে পাড়ি জমাতো দূর-দূরান্তের হাট-বাজারে। আগের দিনে রস কিনতে অনেক লোকের সমাগম দেখা মিলতো রসের হাঁটে।

গৃহবধূ সুমা বেগম বলেন, শীতের সকালে গাছ থেকে নামানো কাঁচা রসের স্বাদ যেমন বর্ণনা করা সম্ভব নয়, তেমনি জ্বাল করা রসের তৈরি বিভিন্ন খাবারের স্বাদ ও চাহিদাও অনেক। কুয়াশামাখা সকাল বেলায় রসের তৈরি পায়েসের গন্ধে মৌ মৌ করে চারিদিক। তবে এখন আর এসব দৃশ্য চোখে পড়ে না।

ওডি/এসএএফ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড