• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শিকলে বন্দি করে দুই ভাইকে সৎ মায়ের নির্যাতন!

  নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

১৭ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:১৭
নির্যাতিত দুই ভাই ও তাদের বাবা
নির্যাতিত দুই ভাই ও তাদের বাবা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

প্রায় এক বছর ধরে বদ্ধ ঘরে শিকলে বন্দি ছিল দুই ভাই সুমন ও রাজু। সম্পত্তির লোভে সৎ মা তাদের পাগল সাজিয়ে শিকল বন্দি করে দীর্ঘ দিন ধরে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন কুতুবপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে সৎ মায়ের নির্যাতনে এক ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। আরেক ভাইকে পুলিশ উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে।

ওই দিন রাতে নিহত হেমায়েত হোসেন সুমনের (৩৫) লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ছোট ভাই সাফায়েত হোসেন রাজুকে উদ্ধার করে পুলিশ তার বাবা হাবিবুল্লাহ ক্যাশিয়ারের হেফাজতে দিয়েছে। তবে পরিবারের দাবি সুমন ও রাজু দুজনেই মানসিক প্রতিবন্ধী।

উদ্ধার হওয়া রাজু জানান, সে নোয়াখালীর রামনগর কেএমসি হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করা অবস্থায় তাদের মা মোহসেনা বেগম মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আর তার লেখাপড়া করা হয়নি। তাদের মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা ছোট খালা কহিনুর বেগমকে বিয়ে করেন। সেই খালাও মৃত্যু বরণ করেন। খালার মৃত্যুর পর তার বাবা আরেকজন নারীকে বিয়ে করেন। এরপর দুজনের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়।

এরপর তার বাবা পুনরায় হনুফা নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। আর এই হনুফাই এখন তাদের সৎ মা। এরপর থেকেই সুমন ও রাজুর ওপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতন। তারপর দিনের পর দিন দুই ভাইকে শিকলে বন্দি করে কলাপসিবল গেটের মধ্যে আটকে রেখে চালানো হয়েছে নির্যাতন। কপালে জুটতো না তিন বেলায় এক মুঠো ভাতও।

এর একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার তার বড় ভাই সুমনের মৃত্যু হয়। ভাইয়ের মৃত্যুতে কান্নাকাটি করলেও তার পরিবারের কেউ তার কাছে আসেনি। সম্পত্তির লোভেই তার সৎ মায়ের পরামর্শে তার বাবা তাদের দুই ভাইয়ের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে।

রাজু আরও বলেন, নির্যাতনের সময় তার সৎ মা ও সৎ ভাইয়েরা চিৎকার পর্যন্ত করতে দেয়নি। তিনি ও তার ভাই পাগল না। বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতেই তদের পাগল সাজানো হয়েছে। রাজুর দাবি, তার বড় ভাই সুমন নির্যাতনের কারণেই মারা গেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাবা হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘রাজুর অভিযোগ অসত্য। তার পাঁচ ছেলে সন্তান। আগের সংসারের দুজন ছেলে মানসিক রোগী। অপর তিনজনের মধ্যে সেফায়েত মহোসেন মোহন, ফাহিম হোসেন শাহিন ও ফাহাদ হোসেন শাকিল লেখাপড়া করে। অসুস্থ দুই ছেলেকে অনেক চিকিৎসা করিয়েছেন। অসুস্থতার কারণে বড় ছেলের মৃত্যু হয়েছে।’

আরও পড়ুন : ময়মনসিংহে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার এসআই ফজলুল হক জানান, নিহতের শরীরের পেছনে পচন ধরেছে। আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আরেকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে তার বাবা হাবিবুল্লাহর কাছে রাখা হয়েছে এবং তাকে যেন আর বন্দি বা নির্যাতন করা না হয় সে বিষয়ে কঠোরভাবে বলা হয়েছে।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড