গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের আলোচিত স্কুলছাত্র আশিকুর রহমান সাম্য হত্যা মামলায় তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও অপর আট আসামিকে ৫ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আট আসামির প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়। দীর্ঘ প্রত্যাশিত এ রায়ে অসন্তোষ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সাম্যর পরিবার, সহপাঠী ও গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
রায়ের পর নিহত সাম্যর বাবা গোবিন্দগঞ্জ পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার আদালতে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১১ আসামি পরোক্ষ সহযোগিতায় ছেলেকে হত্যা করে। দীর্ঘ তদন্ত, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও আসামিদের স্বীকারোক্তিতে হত্যাকাণ্ডটি প্রমাণিত হয় আদালতে। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, দোষীরা প্রত্যেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে। কিন্তু এই রায়ে আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৬) দুপুরে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ দীলিপ কুমার ভৌমিক এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত সকলেই আদালতে উপস্থিত ছিল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলো-, শাহারিয়ার সরকার হৃদয়, রাকিবুল হাসান সজিব ও মাহামুদুল হাসান জাকির প্রধান। এদের মধ্যে হৃদয় ও জাকির নিহত সাম্যর সহপাঠী।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আট আসামিরা হলো- মাসুদ প্রধান সুজন, আল-আমিন ইসলাম, আল-আমিন, রাবেয়া বেগম, শিমুল মিয়া, রুনা বেগম, জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক কাউন্সিরর জয়নার আবেদিন। দণ্ডপ্রাপ্ত সকলেই গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা।
এ দিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ প্রধান বলেন, সাম্য হত্যার প্রতিবাদ ও হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছিল গোবিন্দগঞ্জবাসী। দীর্ঘ প্রত্যাশিত হত্যা মামলার রায়ে আমরা হতাশ হয়েছি।
মামলার রায়ে আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও প্রতিহিংসার জেরে পরিকল্পিতভাবে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে সাম্যকে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখে।
গত ৬ জানুয়ারি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ধার্য করে আদালত। এ মামলায় আদালতে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও শুনানি হয়।
উল্লেখ্য, গোবিন্দগঞ্জ পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সরকারের একমাত্র ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র আশিকুর রহমান সাম্য ২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর অপহরণ হয়। পরদিন বর্ধনকুঠি বটতলার কমিউনিটি সেন্টারের সেপটিক ট্যাংক থেকে তার হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন : সাম্য হত্যা মামলায় ৩ আসামির ফাঁসি
হত্যার ঘটনায় ৯ নম্বর ওয়ার্ড পৌর কাউন্সিলর জয়নাল আবেদিন এবং সাম্যের সহপাঠীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন সাম্যর বাবা। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৬ সালের ১১ মার্চ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
ওডি/এমবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড