কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে হাড়কাঁপানো শীত। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার কর্মজীবী মানুষদের জীবনযাত্রা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সকাল থেকে তীব্র শীত বিরাজ করলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে।
এ দিকে, আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বর্তমানে কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। ফলে ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল ঠান্ডা হাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষ। কনকনে শীতে বিশেষ কোনো কাজ ছাড়া সকালে বাইরে বের হচ্ছে না অনেকেই।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, মঙ্গলবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আরও কিছুদিন আবহাওয়া এমন থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
টানা শৈত্যপ্রবাহের কারণে হাসপাতালগুলোতে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের ভিড় বেড়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার পুলক কুমার সরকার জানান, তীব্র শীতের প্রকোপে শীতজনিত রোগে প্রতিদিন হাসপাতালগুলোতে ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি।
তিনি বলেন, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হচ্ছে।
এ দিকে, প্রচণ্ড শীতের দাপটে জেলার বোরো বীজতলা ও আলু ক্ষেতে ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান প্রধান জানান, চলতি বছর জেলায় ৫ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে বীজতলা লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয়েছে ৫ হাজার ৯৯৪ হেক্টর জমিতে। এছাড়া আলুর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৬৮৮ হেক্টর জমিতে, যা এখন পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৬ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে। তবে টানা শীতের কারণে বেশ কিছু এলাকায় বোরো ও আলু ক্ষেতের কিছুটা ক্ষতি হলেও দিনের রোদের কারণে এই ক্ষতি অনেকাংশে পুষিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন : পঞ্চগড়ে বিশেষ অভিযানে ৭ মাদকসেবীর কারাদণ্ড
এ দিকে, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দীলিপ কুমার সাহা জানিয়েছেন, জেলাজুড়ে শীতর্তদের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬৩ হাজার ১৪ পিস কম্বল উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ২ হাজার কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া কম্বল কেনার জন্য ১০ লাখ টাকা, শিশু পোশাক কেনার জন্য ৩ লাখ টাকা এবং শিশু খাদ্যের জন্য আরও ১ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে প্রায় ২ হাজার শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড