লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন না সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
আসন ফাঁকা মঞ্চে বক্তব্য দিতে গিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) দিনভর আদিতমারী উপজেলা পরিষদ আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উন্নয়ন দর্শন বিষয়ক আলোচনা সভায় সকল আসন ফাঁকা দেখা যায়।
জানা গেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশের মতো আদিতমারী উপজেলা প্রশাসন সারা দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বের হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
আদিতমারী উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনের সভাপতিত্বে উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর দর্শন শীর্ষক আলোচনা সভা শুরু হয়। আলোচনা সভা শুরু পর পরই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব বিদ্যালয়ে চলে গেলে পুরো মঞ্চের আসন ফাঁকা হয়ে পড়ে। প্রথম সারিতে অফিসাররা আর পেছনে নিরাপত্তা কাজে থাকা পুলিশ সদস্য ছাড়া সকল আসন ফাঁকা হয়ে যায়। বক্তা থাকলেও শ্রোতার অভাবে বাধ্য হয়ে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করেন আয়োজকরা। পাঁচ শতাধিক আসনের বিশাল মঞ্চের সামনের সোফায় গুটিকয়েক অফিসার বসে থাকলেও বাকি সকল আসন ফাঁকা হয়ে সৌন্দর্য হারায় অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে আসেননি খোদ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস। সব দিক থেকে নানান সমালোচনার জন্ম দেয় 'উন্নয়ন দর্শনে বঙ্গবন্ধু' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, সরকারি অনুষ্ঠান হলেও সরকারি কর্মচারীরা সকলে এসে ক্যাপ ও টি-শার্ট নিয়ে র্যালি করেই চলে যান। শিক্ষার্থীরা ক্লাস ছেড়ে র্যালিতে অংশ নিলেও তাদের টি-শার্ট বা ক্যাপ দেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধুর অনুষ্ঠানে নেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সরকারি কর্মচারীরা বসলেও দুইশতাধিক আসন ভরে উঠত। তাদের অনুষ্ঠানে তারাই নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনুষ্ঠানে নেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সরকার দলীয় জনপ্রতিনিধিরাও আসেননি অনুষ্ঠানে। অথচ বিভিন্ন তদবির করতে প্রতিদিন অফিসে আসেন অনেক নেতাকর্মী। বঙ্গবন্ধুর অনুষ্ঠানে আজ তারা নেই।
মঞ্চের ফাঁকা আসন দেখে বক্তব্য দিতে গিয়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, সরকারি অনুষ্ঠানে যেসব সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী আসেননি। তাদের নজরদারি করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করার দায়ে অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে তার বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, দলীয় জরুরি কাজে আমি ঢাকায় ছিলাম। অনেক নেতাকর্মীদের উপজেলা পরিষদের অনুষ্ঠানে যেতে বলেছি। বঙ্গবন্ধুর অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী না থাকা দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন : পানি শোধনাগারের পাশেই ভাগাড়!
আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসকে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
ওডি/জেএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড