চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
ছোটবেলায় শিশু-কিশোররা দুষ্টুমি করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই দুষ্টুমির জন্যই যদি শিকলবন্দি হতে হয় তবে বিষয়টি নিশ্চই অমানবিক।
এমন ঘটনাই ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বেলগাছি রেলগেট এলাকায়। দুষ্টুমি ছাড়াতে সাগর নামে ১১ বছর বয়সী ছেলের দুই পায়ে শিকল পরিয়ে গৃহবন্দি করে রেখেছেন তার আপর বাবা-মা।
এ জন্য রবিবার (৫ জানুয়ারি) বিকালে রেলগেটের জাহিদুল ইসলামের ওয়েল্ডিংয়ের দোকানে সাগরকে নিয়ে যান তার বাবা আলমসাধু চালক আকবর আলী। পরে বৈদ্যুতিক ঝালাই মেশিন দিয়ে সাগরের দুই পায়ে বেড়ি পরানো হয়। এ সময় আগুনের ফুলকিতে বেশ কিছু স্থানে ঝলসে যায় তার পা। ব্যথায় হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেও পা থেকে বেড়ি খোলেননি তার বাবা।
সগরের পরিবার জানায়, সাগর দুষ্টু প্রকৃতির কিশোর। কারও কোনো কথাই শুনতে চায় না। বেপরোয়া ও দুরন্তপনা স্বভাব তার। ওর দুষ্টুমি থামাতে না পেরে এর আগেও তার বাবা একবার পায়ে বেড়ি পরিয়ে ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন। কিছুদিন পর বেড়ি খুলে দেওয়া হলে সাগর আবারও দুষ্টুমি শুরু করে।
তারা আরও বলেন, দুষ্টুমির কারণে অনেকেই তাকে মারধর করে। সাগরকে অন্যরা প্রায়ই মারধর করে দেখে তার বাবা সাগরের পায়ে আবারও বেড়ি পরিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
এ দিকে, সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে আকবর আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়- সাগরের দুই পায়ে বেড়ি পরানো। বেড়ির পাশেই লাগানো হয়েছে শিকল। সেখানে কাপড় জড়িয়ে রাখা। এ সময় ১১ বছর বয়সী কিশোর সাগরের চোখেমুখে দেখা যায় কষ্টের ছাপ।
কেন তার পায়ে বেড়ি পরানো হয়েছে এমন প্রশ্ন শুনেই ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে দরজার দিকে তাকায় সাগর। পরে তার মা শিউলী খাতুন ওরফে পাখি বলেন, ‘সাগরকে কিছুতেই বশে রাখা যায় না। সকালে আলামিন নামের একজন ওকে খুব মারধর করেছে, অপবাদও দিয়েছে। পরে সবকিছু শুনে ওর বাবা তার পায়ে বেড়ি পরিয়ে দিয়েছে।’
মা হয়ে সন্তানের এমন দশা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে শিউলী যেন তার অসহায়ত্বটাই তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন : ঝিনাইদহে সড়কে ঝরল ভ্যান চালকের প্রাণ
বিষয়টি নিয়ে সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ খানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এটা খুবই অমানবিক। আমি এখনই পুলিশ পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড