সারাদেশ ডেস্ক
পরিবারের অমতে দুইদফা বিয়ে করে লাশ হলেন গৃহবধূ লাইজু আক্তার (১৮)। ২ জানুয়ারি রাতে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তুলুতালি এলাকার তরিকুল ইসলামের ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে লাইজুর বড় ভাই ইসমাইল শিকদার বাদী হয়ে ভোলা সদর মডেল থানায় যৌতুকের দায়ে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে সাতজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- নিহত লাইজু আক্তারের স্বামী মো. তানজিল, শ্বশুর মো. তরিকুল ইসলাম, শাশুড়ি হাসিনা, ননদ তানিয়া ও মিতু, ভাসুর তানভির ও তার স্ত্রী।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মোফাজ্জল হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে লাইজুর শ্বশুরবাড়ির গৃহকর্মী ময়ফুল বেগমের কাছ থেকে জানা গেছে; বিয়ের পর থেকে লাইজুকে বিভিন্ন সময় পরিবারের সদস্যরা মারধর করত। ঘটনার দিনও লাইজুকে তারা মারধর করে। তবে মারধরের কারণে লাইজু মারা গেছেন কি না সেটা সে জানে না। লাইজুর লাশ রুমে কম্বল দিয়ে পেঁচিয়ে রেখে ঘরের সবাই পালিয়ে যায়। ওই সময় ময়ফুল বেগম জানতেন না যে লাইজু মারা গেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, লাইজু কীভাবে মারা গেছে এটি এখন আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা এ ঘটনায় তদন্ত করছি। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে।
গৃহবধূ লাইজুর বড় ভাই জানান, আড়াই বছর আগে লাইজুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তানজিলের। বিষয়টি লাইজু আমাদের বললে আমরা তানজিল ও তার পরিবার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেই। ওই সময় আমরা জানতে পারি তানজিল মাদকাসক্ত। এ জন্য আমরা বিয়েতে রাজি হইনি। এ জন্য দুই বছর আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করে। বিয়ের পর লাইজুকে তানজিল তাদের বাড়ি নিয়ে যায়। আমরা বোনের শান্তির কথা চিন্তা করে বিয়ে মেনে নেই।
কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই তানজিল ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে লাইজুকে মারধর করত। লাইজু আমাদের জানালে আমরা লাইজুকে আমাদের বাড়ি নিয়ে আসি। গত ৪-৫ মাস আগে লাইজু তানজিলকে তালাক দেয়।
তিনি আরও জানান, তালাকের কিছুদিন পর তানজিল আবার লাইজুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ শুরু করে। এ পর্যায়ে লাইজুকে বিভিন্ন রকম মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আবার কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে করে তানজিলের বাড়িতে নিয়ে যায়।
পরে আমরা জানতে পেরে লাইজুর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেই। বিয়ের কয়েকদিন পর থেকে জানতে পারি লাইজুকে আবারও নির্যাতন শুরু করে তানজিল ও তার পরিবার। লাইজুকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন ইসমাইল। এ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
ভোলা মডেল থানার ওসি মো. এনায়েত হোসেন জানান, লাইজু মারা যাওয়ার পর আসামিরা পালিয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ওডি/জেএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড