• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিদায়ী বছর দেশ কাঁপিয়েছে নুসরাত হত্যা

  ফেনী প্রতিনিধি

০৩ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:০২
ফেনী
মা ও ভাইয়ের সঙ্গে বামে নুসরাত জাহান রাফি (ফাইল ছবি)

২০১৯ সালে বিদেশি ও দেশি গণমাধ্যমের আলোচিত বিষয় ছিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা।

ওই বছরের ৬ এপ্রিলের অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনাটি ৬ মাসে নিষ্পত্তি হয়। ২৪ অক্টোবর ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। যা দেশের বিচারাঙ্গনে নজিরবিহীন।

২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার কার্যালয়ে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি যৌন হয়রানির শিকার হন। এ ঘটনায় তার মা শিরীন আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ সিরাজকে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে প্রেরণ করে। ঘটনায় সিরাজের পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

সিরাজের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে রাফির পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। একপর্যায়ে ৬ এপ্রিল রাফিকে পরীক্ষা কক্ষ থেকে ডেকে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

তার চিৎকারে মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারী ও পুলিশ এগিয়ে আসে, দগ্ধ রাফিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের বিছানা থেকে নুসরাত বিচার চেয়ে গেছেন। ঘটনাটি সংবাদমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের জন্য প্রথমে ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেন পরবর্তীতে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত ঘটনাটি গড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে নুসরাতের পরিবারকে ডেকে নিয়ে বিচারের আশ্বাস দেন। নুসরাতের ভাই নোমানকেও ব্যাংকে চাকরি দেন। এরপরই বিচার দ্রুত শুরু হয়।

এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মো. শাহ আলম ৫২ দিনের মাথায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পিবিআই অন্য ৫ জনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করলে আদালত তা অনুমোদন করেন। গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাত রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

২৪ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— গ্রেফতারকৃত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমিন, সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, মাদ্রাসার প্রভাষক নুরুল আবছার, হেফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ আবদুল কাদের, মোহাম্মদ শামীম, ছাত্রদল নেতা নূর উদ্দিন, মাদরাসা শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, নুসরাতের সহপাঠি উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম শরীফ, জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল।

ওডি/জেএস

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড