নিজস্ব প্রতিবেদক
সংকট তৈরি হয়েছে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলায় আওয়ামী যুবলীগের নেতৃত্ব নিয়ে। গত ১৯ সেপ্টেম্বরে গঠিত আহ্বায়ক কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রত্যেক ইউনিয়নের কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে উপজেলা সম্মেলনের আয়োজন করার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু ওই সময় পার হয়ে গেলেও এখনো কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
এই অবস্থায় উপজেলার দুটি পক্ষ নিজেদের যুবলীগের ধারক-বাহক বলে দাবি করছে। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যেও বিভেদ তৈরি হয়েছে। সংগঠনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী, বিজয় দিবসেও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসব নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চাপা দ্বন্দ্বও বিরাজ করছে। ফলে উপজেলায় গুরুত্ব হারাচ্ছে আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী এই সংগঠনটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলফাডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আহসান উদদ্দৌলা রানা এবং সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার মেয়র সাইফুর রহমান সাইফারের নেতৃত্বে একটি পক্ষ নিজেদের যুবলীগের ‘অনুমোদিত’ কমিটি বলে দাবি করছে। কিন্তু তাদের বিপরীতে হাসমত হোসেন তালুকদার তপনকে আহ্বায়ক এবং কামরুল ইসলাম ও এস এম জানে আলম জনিকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিও সরব আছে।
যুবলীগের এক পক্ষের অভিযোগ, উপজেলায় যুবলীগের সক্রিয় ও শক্তিশালী কমিটি থাকার পরও ফরিদপুর-১ (আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী) আসনের সংসদ সদস্য মনজুর হোসেন গোপনে চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতাদের দিয়ে আগের কমিটি বিলুপ্ত করে ২২ সদস্য বিশিষ্ট নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। যেখানে সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ স্বাক্ষরিত কমিটির অনুমোদন পত্রে তিন মাসের মধ্যে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের কাউন্সিল সম্পন্ন করে উপজেলার সম্মেলন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৯০ দিন অনেক আগেই কেটে গেছে। কিন্তু এখনো এর কোনো অগ্রগতি নেই। এখন পর্যন্ত উপজেলায় যুবলীগের সম্মেলন করার কোনো প্রস্তুতিই চোখে পড়েনি। বরং দুই পক্ষের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে ভেতরে ভেতরে তুমুল রেষারেষি চলছে।
সর্বশেষ যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী, ১৬ ডিসেম্বরসহ নানা আয়োজনে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়েছে। নেতাকর্মীরাও দুই পক্ষে ভাগ হয়ে কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিয়েছে। এই অবস্থায় আলফাডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের কার্যক্রম দিন দিন গৌণ হচ্ছে।
২০০৫ সালের শেষ দিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর পর দীর্ঘদিন সংগঠনটির কোনো উপজেলা সম্মেলন হয়নি।
এ ব্যাপারে মো. সাইফার রহমান সাইফুর জানান, সংসদ সদস্য মো. মুনজুর হোসেন নিজের ঘনিষ্ঠ বিএনপি-জামায়াতের লোকদের প্রতিষ্ঠিত করতে গোপনে আলফাডাঙ্গার আহ্বায়ক কমিটি কেন্দ্র থেকে করিয়ে এনেছেন। তিনি বোয়ালমারীতেও একই কাজ করেছেন। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের যুবলীগে এনেছেন। যে কমিটির ১ নম্বর সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী সাইফুল্লাহ, যিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ছাড়াও জামায়াত-বিএনপির আরও একাধিক নেতাকর্মী কমিটিতে স্থান পেয়েছেন।
সাংসদের নিজের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে উপজেলা যুবলীগের মতো শক্তিশালী সংগঠনটি দুর্বল হয়ে পড়ছে বলেও মনে করেন এই নেতা।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড