নাটোর প্রতিনিধি
স্বামী মারা যাওয়ার এক মাস পরই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নিঃসন্তান নারী। এরপর ধর্ষিতাকে মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়েই ঘটনা ধামাচাপা দিলেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা। এতে স্থানীয়দের ক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। এমনই ঘটনা ঘটেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নে।
জানা যায়, নিঃসন্তান বিধবা নারীকে ধর্ষণের পর হুমকি দেওয়ায় ভয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে যান তিনি। ধর্ষকের হুমকি-ধামকিতে থানা পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়নি তাকে। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাত্র দুই হাজার টাকায় ধর্ষণের বিচার করে ধর্ষিতার হাতে তুলে দিয়েছেন টাকা। এ নিয়ে স্থানীয়দের তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।
ওই নারী ও এলাকাবাসীরা জানান, গত এক মাস আগে তার স্বামী মারা গেছে। কোনো সন্তান না থাকায় বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের বাসিন্দা রাজাউল্লার ছেলে মোখলেছুর রহমানসহ তার দুই সহযোগী ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় ওই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তারা। বিধবা নারীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ধর্ষক মোখলেছুর রহমানকে আটক করে। তবে পালিয়ে যায় তার দুই সহযোগী।
ওই দিন রাত ১টার দিকে ধর্ষিতার বাড়িতে বসে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে স্থানীয় লোকজন। অবস্থার বেগতিক দেখে ধর্ষিতাকে নানাভাবে হুমকিও দেওয়া হয়।
পরে অভিযুক্ত মোখলেছুরের পরিবার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি মোস্তফা খানের স্মরণাপন্ন হলে ওই আওয়ামী লীগ নেতা ধর্ষিতার হাতে ২ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনার মীমাংসা করে দেন। এ ঘটনায় অসহায় বিধবা নারী ভয়ে নীরবে বাবার বাড়ি চলে যায়।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) এই প্রতিবেদক ধর্ষিতার বাড়িতে গেলে সেখানেই কথা হয় তার সঙ্গে। এ সময় পুলিশের কাছে কেন গেলেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে ধর্ষিতা বলেন, ‘গরীব মানুষ কোনো বিচার পায় না। পুলিশের কাছে গেলে আমি বাড়িতে থাকতে পারব না। আল্লাহ এর বিচার করবে।’
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত মোখলেছুরের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মোস্তফা জানান, এ ব্যাপারে আমি জানি না, আপনারা ভালো করে নিউজ করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অন্যায় করেছে। অভিযুক্তদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন-আর রশিদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এখন যেহেতু জেনেছি, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড