বরিশাল প্রতিনিধি
রাজাকারের তালিকা নিয়ে বরিশালে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ওই তালিকায় রাজাকার হিসেবে বাসদের বরিশাল জেলা সদস্য সচিব ও সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তীর মুক্তিযোদ্ধা বাবা অ্যাড. তপন কুমার চক্রবর্তী এবং ঠাকুমা উষা রানী চক্রবর্তীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়েও আজ তারা রাজাকারের তালিকায়।
এ নিয়ে বরিশালে মুক্তিযোদ্ধারাও দ্বিমত পোষণ করে তালিকা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন। দেশের আলোচিত নেত্রী মনিষা চক্রবর্তী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
ড. মনীষা বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। এমনকি শ্রমজীবীদের জন্য কাজ করতে গিয়ে পুলিশি নির্যাতন ও কারাবরণও করেছেন। তিনি সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, ‘মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করার পুরস্কার পেলাম আজ। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগকে। সদ্য প্রকাশিত রাজাকারদের গেজেটে আমার বাবা এবং ঠাকুমার নাম প্রকাশিত হয়েছে। আমার বাবা অ্যাড. তপন কুমার চক্রবর্তী একজন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা, যার ক্রমিক নং ১১২, পৃষ্ঠা ৪১১৩। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেয়ে থাকেন। আজ রাজাকারের তালিকায় তিনি ৬৩ নম্বর রাজাকার। আমার ঠাকুরদা অ্যাড. সুধির কুমার চক্রবর্তীকে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তিনিও ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত। তার সহধর্মিণী আমার ঠাকুমা উষা রানী চক্রবর্তীকে রাজাকারের তালিকায় ৪৫ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য আমার রাজনীতি করার খেসারত দিতে হচ্ছে আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগ সরকারকে। আমরা জেল খেটেছি, নির্যাতন সহ্য করেছি কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি। ভয় দেখিয়ে আমাদের কিছু করা যাবে না।’
বরিশালের বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত চৌধুরী বলেন, সরকার যে তালিকা করেছে তাতে আমাদের দ্বিমত আছে। আমরা যে তালিকা দিয়েছি সেই তালিকার সাথে এর মিল নেই। এটি সংশোধন করা দরকার।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এ এমজি কবির ভুলু বলেন, তপন চক্রবর্তীর বাবাকে গুলি করে মেরে ফেলেছিল পাকিস্তানি বাহিনী, এ বিষয়টি তার জানা আছে। তবে তালিকার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
এই ব্যাপারে বাসদের বরিশাল জেলা সদস্য সচিব মনিষা চক্রবর্তী বলেন, যে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় বাবাকে রাজাকার হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে, সেই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ই তাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জাতির জন্য লজ্জাকর ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধে আমার ঠাকুর দাদাকে পাকিস্তানি বাহিনী বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল। সেই শহীদ পরিবারের সন্তান ও পুত্রবধূকে রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করায় ওই তালিকা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
ওডি/আরবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড