এসএম ইউসুফ আলী, ফেনী
বাতাসে এখন শীতের গন্ধ। মাঠের পর মাঠ সবুজ ধানের শীষগুলোতেও এখন সোনা রঙের হাসি। শেষ অগ্রহায়ণের সোনালি রোদে সেই হাসি আরও ঝলমল করে ওঠছে। অনেক মাঠেই কাস্তে নিয়ে ধান কাটার উৎসবে নেমে পড়েছেন কৃষক। ফুরফুরে মনে ফসল উঠানে তুলছেন তারা। আবহাওয়া ও পরিবেশ প্রতিকূলে থাকা সত্ত্বেও এ বছর ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে।
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর, নয়ানপুর, জগতপুর, সিন্দুরপুর, রাজাপুর, রামনগর, মাতুভূঞা ও জয়লস্কর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশা মাখা ভোর থেকে দলবেধে আইল ধরে কৃষক ছুটছেন ক্ষেতে। দলবেধে কাস্তে হাতে নেমে পড়ছেন তারা। ধান কেটে আঁটি বেঁধে রাখছেন ক্ষেতের মাঝেই। বিকাল থেকেই শুরু হয় সেই আঁটি বোঝা বেঁধে মাথায় করে বাড়ি নেওয়া।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. হারুন-অর-রশিদ জানান, ৮ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে এ বছর আমন চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিআর-১১, ২২, ২৩, ব্রি ধান-৪৪, ৪৯, ৫১, ৫২, ৬২, ৭২, ৭৩, ৭৬, ৮০, ৮৭, বিনা ধান-৭, ১৭ সহ স্থানীয় কিছু বাজাল, কালো জিরা জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। ২৫টি ব্লকের মধ্যে সবগুলো ব্লকে ধান কাটা মাত্র শুরু হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আমন ফসল অনেকটাই ভালো হয়েছে। পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ ছিল কম। এরপরও কোনো সমস্যা দেখা গেলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করা হতো। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সঙ্গে সঙ্গে পরামর্শ দিয়ে সব সমস্যার সমাধান করে দিত।
রামনগর গ্রামের কৃষক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘এবার ২ বিঘা জমিতে ব্রি ধান-৫২ জাতের ধান লাগিয়ে ছিলাম। ফলন ভালো হয়েছে। চলতি বছর ধানের ছড়া বের হওয়ার মুখে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আঘাত হানে। এতে ফসলহানির আশঙ্কাও করেছিলাম। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও ধানের বাম্পার ফলন দেখে খুশি হয়েছি।’
পূর্ব চন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক ওমর ফারুক বলেন, ‘উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মারুফের পরামর্শে ৩ বিঘা জমিতে জিংক সমৃদ্ধ জাতের ব্রি ধান ৬২ চাষ করেছি। ধানের ফলন বেশ ভালো হয়েছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাফিউল ইসলাম জানান, চলতি আমন মৌসুমে গত বছরের তুলনায় ফসলের লক্ষ্যমাত্রা ছড়ানোর জন্য আমরা কৃষকদের নতুন জাতের ধান চাষ করার পরামর্শ দিয়েছি।
কৃষি বান্ধব সরকার কৃষি উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। আমন ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সবসময় সার্বিক সহযোগিতা করেছি। এবার সরকারি খাদ্য গুদাম ৮৮৫ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমনের উৎপাদক কৃষকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব ধান বিক্রি করতে পারলে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবে।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড