হারুন আনসারী, ফরিদপুর
ফরিদপুরের সবজিভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত সদরপুর উপজেলা। ঋতুভেদে প্রায় সবধরনের সবজি উৎপাদন হয় এই উপজেলায়। সদরপুর উপজেলার শৈলডুবি গ্রামের ফসলের ক্ষেতগুলো ভরে উঠেছে বেগুন, সিম, মুলাসহ নানা সবজিতে। এরমধ্যে বেগুনের ক্ষেতই বেশি।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ফরিদপুরের সদরপুরে বেগুনের আবাদ হয়েছে ৪৮৬ হেক্টর জমিতে। যা থেকে উৎপাদন হবে ১১ হাজার ১৭৮ মেট্রিকটন।
আশঙ্কার কথা, ক্ষেত থেকে তোলার পরই এসব বেগুনে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর ফরমালিন। সংশ্লিষ্টদের দাবি, বেগুন শুধু দীর্ঘসময় টাটকা রাখার জন্যই নয়, অতিরিক্ত পোকাপ্রবণ হওয়ায় এই ফরমালিন না মেশালে গাছ থেকে ছেড়ার পরেও বেগুনে পোঁকা ধরার আশঙ্কা থেকে যায়।
সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে দেখা যায়, সেখানকার শৌলডুবী, মাঠ শৌলডুবী, আবুলের মোড়, বাঁধানো ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেত থেকে বেগুন তুলছেন চাষিরা। পরিবার পরিজন নিয়ে এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এরপর এসব বেগুন তুলে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন।
দেখা গেল, পাইকাররা এসব বেগুন স্তূপ করে রাখছেন। এরপর বেগুন তুলে প্রথমেই ফরমালিন মেশানো ড্রামের পানিতে চুবিয়ে নিচ্ছেন। তারপর সেসব বেগুন বস্তায় ভরে নিচ্ছেন। বিক্রির পর চালান করে দিচ্ছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে।
এ ব্যাপারে চাষি আবু বাকার জানান, মাত্রাতিরিক্ত পোকা উপদ্রবের কারণে প্রতি সপ্তাহেই বেগুন গাছে কীটনাশক দিতে হয়। গাছ থেকে তোলার পরও বেগুন টাটকা দেখাতে ও দীর্ঘ সময় সংরক্ষণের জন্য ফরমালিন মেশানো হয়। এছাড়া সদ্য তোলা বেগুনেও পোকার কীট থেকে যেতে পারে। সেই শুককীটের আক্রমণ থেকে সবজিগুলোকে রক্ষার জন্যও এটা করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাইকার বাকারের এ বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। ফরমালিন মেশানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করতে রাজি নন তারা।
তাদের দাবি, বেগুনগুলো পানিতে ধুয়ে বস্তায় ভরা হয়। এই পানিতে ফরমালিন নেই। একই ড্রামের সামান্য এই ময়লা পানিতে কি বেগুন ধোয়া যায় কিংবা গাছের এই পিচ্ছিল বেগুনে কোনো ময়লা না থাকলেও কেন ধুতে হবে? এ প্রশ্নেরও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তারা।
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের এসব গ্রামে প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্ষেত থেকে বেগুন তোলার পর ফরমালিন মিশিয়ে সেগুলো বস্তাজাত করার দৃশ্য মিলে।
চাষিদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা মণ দরে কিনে এসব বেগুন পাইকারা প্রকার ভেদে ১২শ থেকে ১৫শ টাকা মণ দরে বিক্রি করছেন।
হারেজ মোল্যা নামে সেখানকার এক কৃষক বলেন, আমরা বেগুন চাষের সময় প্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহার করি তবে তাতে ফরমালিন মেশাই না।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, ‘শৌলডুবীর বেগুন চাষিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি। এছাড়াও আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা বেগুন ক্ষেতগুলোতে বিশেষ নজরে রাখে। যে কোনো সমস্যায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।’
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড