• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আদালতে সু চির ‘মিথ্যাচার’ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাখ্যান

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৩০
সু চির বক্তব্যে ক্ষুব্ধ রোহিঙ্গারা
আদালতে মিয়ানমার নেত্রী সু চির বক্তব্যে ক্ষুব্ধ রোহিঙ্গা শরণার্থীরা (ছবিসূত্র : আল-জাজিরা)

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়েছে। কাঠগড়ায় নিজের সাড়ে ২৭ মিনিটের বক্তব্যে গাম্বিয়ার করা গণহত্যার অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। সু চির বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা।

তাদের মতে, “মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও তাদের বৌদ্ধ দোসররা ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ নিয়েই নিরীহ রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছে।”

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরে শরণার্থীরা টিভিতে আন্তর্জাতিক আদালতের এই বিচারিক কার্যক্রম দেখে সু চিকে নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, ‘আমরা ভয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি, তার এই বক্তব্য ভুল। তিনি কেবল সেনাবাহিনী ও মগদের সন্তুষ্ট করার জন্যই এমন মিথ্যা কথা বলছেন।’

এ দিকে আব্দুল করিম নামে ষাটোর্ধ্ব এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘২০১৭ সালের আগস্টের শেষ দিকে বর্মিজ মিলিটারির গুলিতে আমার ভাই ও স্ত্রী মারা যায়। আমরা যখন বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে যাচ্ছিলাম তখন তারা পেছন থেকে গুলি করছিল আর ‘চলে যা, চলে যা’ বলে চিৎকার করছিল।’

অপর দিকে হেগের আদালতে শুনানি চলাকালে নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি বলেছিলেন, ‘রাখাইনে সেনা অভিযানে যা ঘটেছে, তা গণহত্যার সংজ্ঞার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যে কারণে জাতিসংঘের আদালতে গাম্বিয়ার করা মামলা কেবলই ভুল দিককে নির্দেশ করছে।’

গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে সু চি দাবি করেন, ‘রাখাইনে কোনো গণহত্যা ঘটেনি, সেখানে আরসার মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লড়াই করছে সে দেশের সেনাবাহিনী। রাজ্যের পুলিশ পোস্টে হামলাকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হয়। ফলে বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা ওই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। আর এ বিষয়টিকে কোনো মতেই গণহত্যা বলে মানা যাবে না।’

সু চি রাখাইন পরিস্থিতিকে অত্যন্ত ‘জটিল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ‘দুর্ভোগের’ বিষয়টিও স্বীকার করেন। নোবেলজয়ী এই নেত্রীর মতে, ‘রাখাইন রাজ্যের অনেকেই নিজেদের সুরক্ষার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।’

রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালের সামরিক অভিযানকে বার বার ‘অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ’ হিসেবে উল্লেখ করেন মিয়ানমারের এই নেতা। এ সময় তিনি বলেন, মিয়ানমারের সামরিকবাহিনী স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলার জবাব দিচ্ছিল।

এর আগে গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রথম দিনের শুনানিতে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। এ সময় স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলেন মিয়ানমারের প্রতিনিধি অং সান সু চি।

প্রথম দিনের শুনানিতে গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবাকার তাম্বাদৌ আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, মিয়ানমারকে এ রকম নির্দয় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে বলুন। তাদের বর্বরতা বন্ধ করতে বলুন, যা আমাদের সবার বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। মিয়ানমারকে তাদের নিজেদের লোকদের ওপর গণহত্যা চালানো বন্ধ করতে বলুন।

আরও পড়ুন :- আদালতের প্রশ্নে স্তব্ধ সু চি

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিশাল সামরিক অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এতে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা ওই রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মূলত এই অভিযান নিয়েই ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক আদালতের শুনানিতে চলবে।

ওডি/কেএইচআর

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড