• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নরসিংদী হানাদার মুক্ত দিবস আজ

  নরসিংদী প্রতিনিধি

১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:০৬
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

আজ ১২ ডিসেম্বর নরসিংদী হানাদার মুক্ত দিবস। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে নৃশংস হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষতবিক্ষত ছিল নরসিংদী। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনী এখানে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়।

অবশেষে ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি অভিযানের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। তাদের হত্যা, লুটতরাজ ও পাশবিক নির্যাতনের হাত থেকে মুক্ত করা হয় জেলার লক্ষাধিক মুক্তিকামী মানুষকে।

নরসিংদীকে হানাদার মুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধারা দীর্ঘ ৯ মাস জেলার বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে শতাধিক খণ্ড খণ্ড সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। এতে শহীদ হয়েছেন ১১৬ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েক হাজার মুক্তিকামী মানুষ।

৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকালীন এ জেলায় উল্লেখযোগ্য রণক্ষেত্রগুলো হলো- নরসিংদী সদর উপজেলার চলনদীয়া,পুটিয়া, পাঁচদোনা,আলগী, বাঘবাড়ী, পালবাড়ী, মনোহরদী উপজেলার ভাঙ্গালীনগর, হাটুভাঙ্গা, মেথিকান্দা, রামনগর, হাতিরদীয়া বাজার, রায়পুরা উপজেলার শ্রীরামপুর বাজার, খানাবাড়ী প্রাক্তন নারায়ণপুর বর্তমানে বেলাব উপজেলার অন্তর্গত বেলাব বাজার, বড়িবাড়ী ও নীলকুঠি।

যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে হানাদার বাহিনীর নির্মমতার শিকার হয়ে নরসিংদী সদরের ২৭, পলাশের ১১, শিবপুরের ১৩, রায়পুরায় ৩৭, মনোহরদীর ১২ ও বেলাব উপজেলার ১৬ জন বীর সন্তান শহীদ হন।

এসব যুদ্ধে সুবেদার আবুল বাশার, মমতাজ উদ্দিন, আব্দুস সালাম ও আব্দুল বারী আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে বেলাব বড়িবাড়ীর নীলকুঠির যুদ্ধে হানাদারদের হাতে শহীদ হন। এ ছাড়া পাক হানাদার বাহিনীরা বড়িবাড়ী বাজনাবরের নিরীহ ৮-১০ জনকে ধরে নিয়ে গিয়ে এক সঙ্গে গুলি করে হত্যা করে এবং বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পাক বাহিনীর সদস্যরা রাজাকারদের সহযোগিতায় নরসিংদী জেলার ১৫টি স্থানে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালায়।

যুদ্ধকালীন সময় বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে শহীদ হয়েছেন- ড. সাদত আলী, মো. শহীদুল্লাহ, মো. সামসুজ্জামান, মো. ফজলুর রহমান ও বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক সুরুজ কুমার অধিকারী।

পরে প্রাক্তন মন্ত্রী প্রয়াত আব্দুল মান্নান ভূইয়া, প্রয়াত আফতাব উদ্দিন ভূইয়া, রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজু, মেজর (অব.) সামসুল হুদা বাচ্চু, অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন, সরদার শাখাওয়াত হোসেন বকুল, আব্দুল আলী মৃধা, নেভার সিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, ফজলুর রহমান ফটিক মাস্টার, আজিজুর রহমান ভুলু, মজনু মৃধা, আব্দুর রাজ্জাক ভূইয়া,মীর এমদাদ, মো. নুরুজ্জামান, আব্দুল লতিফ, হাবিবুল্লাহ বাহার, মনছুর আহম্মেদ, আলী আকবর সরকার, নুরুল ইসলাম গেন্দু, বাবর আলী মাস্টার, আবেদ আহমেদ, আব্দুল হাই, সমসের আলী ভূইয়া, মতিউর রহমান মাস্টার, আব্দুল মান্নান খান, তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, বিজয় চাটার্জী, সাদেকুর রহমান কাজী হাতেম আলী, প্রয়াত হাজী গয়েছ আলী মাস্টার, প্রয়াত নূরুল ইসলাম কাঞ্চন, আলী আকবর, মো. আমানুল্লাহ, সিরাজুল হক, তাজুল ইসলাম খাঁন, অধ্যাপক মো. ইউনুছ ও আব্দুল মোতালিব পাঠানদের নেতৃত্বে নরসিংদী জেলাজুড়ে শুরু হয় সাঁড়াশি অভিযান।

তাদের সাঁড়াশি অভিযানের মুখে টিকতে না পেরে ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে নরসিংদী হানাদার মুক্ত হয়।

স্বাধীনতা যুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য জাতীয় পর্যায়ে নরসিংদীর যে সাতজন খেতাবপ্রাপ্ত হয়েছেন তারা হলেন- ফ্লাইট লে. শহীদ মতিউর রহমান বীরশ্রেষ্ঠ, নেভাল সিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ বীর প্রতীক, লে. কর্নেল নজরুল ইসলাম হিরু বীর প্রতীক, লে . কর্নেল আব্দুর রউফ বীর বিক্রম, সুবেদার খন্দকার মতিউর রহমান বীর বিক্রম, বিগ্রেডিয়ার (অব.) এ.এস.এম নুরুজ্জামান বীর বিক্রম ও লে. কর্নেল (অব.) নুরুল ইসলাম ভূইয়া বীর বিক্রম।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড