গৃহবধূর চুল কেটে কারাগারে আ. লীগ নেতা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বটি দিয়ে এক গৃহবধূর চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ। তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে উল্লাপাড়া আমলী আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এ মামলার অন্য ৪ আসামি এখনো পলাতক রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ কোর্ট পরিদর্শক ফজলুল হক ও উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন শাহ পারভেজ এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মামলার প্রধান আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ দিকে, রবিবার এ ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা ১১ই ডিসেম্বরের মধ্যে জানাতে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উল্লাপাড়া থানাকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের দ্বৈত বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন : সিরাজগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

ওইদিন ইসরাত হাসান নামে এক আইনজীবী গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ তুলে ধরে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আদালত ওই নির্দেশনা দেন। ওই সময় সংবাদ মাধ্যম আসামিদের খুঁজে পেলেও পুলিশ কেন তাদের খুঁজে পায় না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আদালত।

আদালতের এ নির্দেশনার পর গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান ও থানার ওসি শাহীন শাহ পারভেজ ওই গৃহবধূর বাড়িতে যান এবং তাদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেন। তাদের নিরাপত্তায় রবিবার (৮ ডিসেম্বর) রাত থেকে বাড়িতে একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে বলেও জানান ইউএনও।

ওই নারীর অভিযোগ, গত ২৫শে নভেম্বর সন্ধ্যায় তিনি তার এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের খোঁজে বের হন। পথিমধ্যে একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের বাড়ির পাশে উধুনিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রশিদ ও তার চার সহযোগী ওই নারীর পথরোধ করেন। এ সময় সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তাকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন তারা।

এতে গ্রামের লোকজন ছুটে এলে তাদের সামনে তাকে বিবস্ত্র করে মারপিট করা হয়। পরে কয়েকশ লোকের সামনে বটি দিয়ে তার মাথার চুল কেটে দেয়া হয়। এ ঘটনায় ২ সন্তানের জননী ওই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে ২ ডিসেম্বর উল্লাপাড়া মডেল থানায় ওই আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ, গজাইল গ্রামের মোজাহারের ছেলে মুনসুর (৩৮), বাহের প্রামাণিকের ছেলে আবদুস সালাম (৪৫), নাসির উদ্দিন (৪০) ও শহিদুল ইসলামের (৩২) নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০/৩০ ধারায় একটি মামলা করেন।

ওডি/আরবি