• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ময়মনসিংহে দ্বিতীয় দিনেও চলছে পরিবহন ধর্মঘট

  ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৪:৩৯
পরিবহন ধর্মঘট
পরিবহন ধর্মঘট (ছবি : দৈনিক অধিকার)

কোনো ধরণের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে বিআরটিসির বাস বন্ধের দাবিতে ময়মনসিংহের সব রুটে দুই দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন সাধারণ গণপরিবহনের শ্রমিকরা। এতে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল।

বিশেষ করে ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি ঢাকাসহ অন্যান্য জেলাগামী যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য অপেক্ষা করে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। অনেক যাত্রীকে বেকায়দায় পড়ে বিকল্প যানে বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো চলা এ ধর্মঘটে জেলার বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এর আগে গতকাল সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড ও পাটগুদাম বাস টার্মিনালসহ সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এ নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব হাতাহাতিতে তিনজন শ্রমিক আহত হন। শ্রমিকদের মারধর এবং বিআরটিসি বাস প্রত্যাহারের দাবিতে এ ধর্মঘট আহ্বান করা হয় বলে জানান সাধারণ গণপরিবহনের শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহ জেলা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব মাহবুব আলম বলেন, ‘বিআরটিসির বাস বন্ধ করা’ আমাদের প্রধান দাবি। যতক্ষণ না তা বন্ধ হচ্ছে আমরা বাস চালাব না। বিষয়টি সমাধানের জন্য গতকাল সোমবার রাতে জেলা প্রশাসকের আহ্বানে পরিবহন মালিকরা বসে ছিলাম। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় বাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত অব্যাহত রয়েছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে স্বল্প পাল্লায় বিআরটিসি বাস দেওয়া হলেও পর্যায়ক্রমে সেটি দূরপাল্লাসহ ময়মনসিংহের বিভিন্ন রুটে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সমিতিকে না জানিয়ে গত রবিবার (৮ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহ-নেত্রকোণা সড়কে ১০টি বিআরটিসি বাস দেওয়া হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক মাসে ময়মনসিংহ শহর থেকে বিভিন্ন উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু করা হয়। এর মধ্যে ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা রুটে ১০টি, ফুলপুর রুটে ১০টি এবং কিশোরগঞ্জ রুটে আটটি নতুন বিআরটিসি বাস যুক্ত হয়েছে। এসব বাস ইজারার মাধ্যমে চালু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার ময়মনসিংহ থেকে নেত্রকোণা রুটে আরও ১০টি বিআরটিসি বাস চালু হয়। কিন্তু পরিবহন শ্রমিকদের বাধায় চার ঘণ্টার মাথায় ওই বাস সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়।

এ দিকে, নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ পথে চালুর মাত্র চার ঘণ্টার মাথায় বিআরটিসির বাস বন্ধের প্রতিবাদে সোমবার নেত্রকোণা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। তারা বলেছেন, এই রুটে দ্রুত বিআরটিসির বাস চালু না হলে মালিক সমিতির কোনো বাসও চলতে দেওয়া হবে না।

বিআরটিসির বাসগুলো ময়মনসিংহ শহরের পাটগুদাম আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল হয়ে চলাচল করে। সাধারণ শ্রমিকদের দাবি, এসব বাস কোনো নিয়ম মানে না। এতে সাধারণ গণপরিবহনে যাত্রী কমেছে। পাশাপাশি বিআরটিসির বাস যত্রতত্র পার্কিং করায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

এ অবস্থায় গতকাল সোমবার সকালে পাটগুদাম আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে বিআরটিসির বাস চলাচলে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন সাধারণ গণপরিবহনের শ্রমিকরা। এ নিয়ে সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সেখানে বিআরটিসি শ্রমিকরা তিনটি বাস রেখে চলে যান। এতে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় উত্তেজনার সময় হাতাহাতিতে তিনজন শ্রমিক আহত হন। সাধারণ শ্রমিকদের দাবি, বিআরটিসির শ্রমিকদের মারধরে তারা আহত হয়েছেন। পরে বেলা তিনটা থেকে জেলা মোটর শ্রমিক সমিতির নেতারা ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাসহ সব জেলায় বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনা মহুয়া বাস সার্ভিসের চালক মোবারক হোসেন জানান, ‘এই রুটে বিআরটিসির ১০টি বাস চললে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। আমাদের দাবি না মানলে আমরা আর বাস চালাব না।’

ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান এ ব্যাপারে বলেন, ‘শ্রমিক-মালিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুতই এ সমস্যা সমাধান করা হবে।’

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড