তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন নতুন সমস্যার সমাধান করতে হবে। এভাবেই আমাদের প্রযুক্তিনির্ভর দেশ গড়ার কাজে মনযোগী হতে হবে। সেক্ষেত্রে চুয়েটের এই মেগা প্রজেক্ট ‘শেখ কামাল আইটি বিজসেন ইনকিউবেশন সেন্টার’ ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া কোলাবোরেশনকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) বহুল প্রতীক্ষিত ও দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সর্বপ্রথম ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ স্থাপন প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প ঘোষণা করেন। মাত্র ১১ বছরের ব্যবধানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭০ লাখ থেকে বর্তমানে উন্নীত হয়েছে প্রায় ১০ কোটিতে। এর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ফাইফজি নেটওয়ার্ক চালু করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা পোস্ট শেয়ার অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সেজন্য ডিজিটাল স্পেসকে নিরাপদ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু নিজে জেনে চুপ থাকলে হবে না। আশপাশের সবাইকে সচেতনও করতে হবে। কেননা একটা ভুয়া নিউজের কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তার ক্ষয়ক্ষতি থেকে আমি-আপনিও নিরাপদ থাকতে পারব না। এ সময় চুয়েটকে দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ স্থাপন প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে বাংলাদেশ রেলপথ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি এবং চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ‘চুয়েট রোবটিকস ল্যাব’ এবং ‘মোবাইল গেইম্স অ্যান্ড অ্যাপ্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের’ উদ্বোধন করেন। পরে তিনি বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চুয়েট কাউন্সিল কক্ষে আইসিটি বিভাগের আইডিয়া প্রকল্প আয়োজিত চলমান ‘সোশ্যাল মিডিয়া প্যারেড’ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে চুয়েটে ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ স্থাপন করা হচ্ছে। প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে চুয়েট ক্যাম্পাসে পাঁচ একর জমির ওপর ১০ তলা ভবন বিশিষ্ট ইনকিউবেটরটি নির্মিত হচ্ছে। ২০২০ সালের জুলাই মাসে মধ্যে এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৬ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ২৬তম সভায় একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চুয়েটের ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন’ প্রকল্পটির অনুমোদন দেন। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে প্রকল্পটি। এই প্রকল্পের আওতায় চুয়েট ক্যাম্পাসে ১০ তলা ভবনের সাত তলা পর্যন্ত ইনকিউবেশন ভবন তৈরি করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশীয় আইটি খাতে সফল উদ্যোক্তা তৈরি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি আইটি শিল্পে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের সুযোগ আরও বৃদ্ধির মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয় প্রত্যাশিত মাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে আশা করছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

ওডি/আইএইচএন