• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভৈরব-ময়মনসিংহ রেল পথের বেহালদশা

  নাজির আহমেদ আল-আমিন, ভৈরব

০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৪৯
রেলপথ
রেলপথ ( ছবি : দৈনিক অধিকার )

ভৈরব-ময়মনসিংহের ১৩২ কিলোমিটার রেলপথে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীরা দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করছে। অথচ বছরের পর বছর ধরে রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলা আর গাফিলতির কারণে রেলপথ থেকে সরে গেছে পাথর। গজিয়েছে সবুজ ঘাস। এমন কি কোথাও কোথাও সরে যাচ্ছে মাটি, প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে ক্লিপ। ফলে নড়েবড়ে অবস্থা ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথ।

অথচ এই রেলপথের রক্ষণা-বেক্ষণের জন্য ভৈরবে রয়েছে শতাধিক কর্মচারী। আর তাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে সহকারী নির্বাহী প্রকোশলীর অফিস।

দিনের পর দিন আর বছরের পর বছর ধরে দায়িত্বে অবহেলা আর গাফিলতির কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে এই রেলপথ। ফলে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা পড়ে সীমাহীন ভোগান্তি আর দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে হাজার হাজার রেল পথের যাত্রী।

শুধু তাই নয়, এই রেল পথের কালিকাপ্রসাদ রেলওয়ে স্টেশনটি কগজে কলমে চালু থাকলেও গেল ৫ বছর ধরে নেই মালামাল বুকিং কিংবা টিকেট বিক্রির কোনো কার্যক্রম। অথচ প্রতিদিনই থামছে ট্রেন, ওঠা-নামা করছে যাত্রীরা।

স্থানীয় রেলওয়ে অফিস সুত্রে জানা গেছে, ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথে ২১টি রেল স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে লোকবলের অভাবে বছরের পর বছর ধরে কালিকাপ্রসাদ, ছয়সূতি, হালিমপুর, বোকাইনগর, নীলগঞ্জ ও যশোদলসহ বেশ কয়েকটি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এই পথের বন্ধ স্টেশনগুলোতে বছরের পর বছর ধরে কোনো কার্যক্রম না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা মালামাল বুকিং করতে পারছে না। আর যাত্রীদের মিলছে না টিকেট। ফলে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন ভূক্তভোগীরা। অথচ এসব বন্ধ স্টেশনে প্রতিদিনই থামছে একাধিক ট্রেন, ওঠা-নামা করছে শত শত যাত্রীরা। বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণের ফলে সরকার প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। তাছাড়া একাধিক অরক্ষিত রেল ক্রসিং রয়েছে। আর সেতু গুলোতে বাশেঁর বদলে দেখা মিলেছে কাঠের হালকা সেপটি।

কালিকাপ্রসাদের আনোয়ার হোসেন, মজনু মিয়া ও শিপন মিয়া জানান, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই রেলপথে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে হাজার হাজার যাত্রীরা প্রতিদিন যাতায়াত করলেও কিংবা একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটলেও টনক নড়নি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের।

এছাড়াও কুলিয়াচরের ট্রেন যাত্রী নাজমুল মিয়া জানান, ভৈরব-ময়মনসিংহ রেল পথে গেল দেড় মাসে ৩ বার ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে। অথচ এ নিয়ে কারোই কোনো মাথা ব্যথা নেই।

রেল পথের নানা অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলতে ভৈরব সহকারী নির্বাহী প্রকোশলী জিষাণ দত্তের অফিসে গিয়ে তাকে না পেয়ে মুঠোফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরদিন আসতে বলেন। পরদিন তিনি কথা দিয়েও অফিসে আসেননি। ফলে তার কক্ষে তালা ঝুলতে দেখা যায়।

পরে এসব বিষয় নিয়ে ভৈরব স্টেশন মাস্টার কামরুজ্জামান প্রথমে বক্তব্য দিতে রাজি না হলেও তিনি পরে গেল দেড় মাসে ৩ বার ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা স্বীকার করে বলেন, আসলে কিছুটা হলেও দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে। তাছাড়া রেল লাইন দেখে রাখা সকলের দায়িত্ব বলে মনে করেন তিনি।

ওডি/এসএএফ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড