ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
আজ ৬ ডিসেম্বর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কবল থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আখাউড়া মুক্ত হয়। এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। ২৫ মার্চ রাতে পাক বাহিনী ঢাকায় আক্রমণ করলে সে দিন থেকেই সারা বাংলাদেশে পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের ত্রিপুরা ঘেঁষা আখাউড়া পূর্বাঞ্চলীয় প্রবেশদ্বার ৭১ রণাঙ্গনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জনপদ ছিল।
১৯৭১ সালে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পর থেকে আখাউড়া উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। মুক্তিযোদ্ধা পরিচালনার জন্য দেশ প্রেমিক, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, যুবক, শ্রমিক নেতা কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের উপস্থিতিতে আখাউড়ায় গঠন করা হয় সর্ব দলীয় সংগ্রাম পরিষদ। ওই পরিষদের নেতৃত্বে ছিলেন কাজী ওয়াহেদুর রহমান লিলু মিয়া।
এস ফোর্সের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল সফিউল্লার তত্ত্বাবধানে এ যুদ্ধ চলতে থাকে। ৩০ নভেম্বর ও ১লা ডিসেম্বর আখাউড়া উত্তরে সীমান্তবর্তী আজমপুর, রাজাপুর, সিঙ্গারবিল, মিরাশানি এলাকায় আধুনিক অস্ত্রে শস্ত্রে পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর যুদ্ধ হয়। টানা ৩ দিন চলে এ যুদ্ধ। এ যুদ্ধ অন্তত ৩৫ পাক সেনা নিহত হয়। বন্দি করা হয় পাঁচ জনকে। মুক্তি বাহিনীর নায়েক সুবেদার আশরাফ আলী খান এ সময় শহীদ হন। আহত হয় অনেক মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের মারমুখী আক্রমণে পাক বাহিনী দাঁড়াতে পারেনি। তারা তখন পিছু হটতে বাধ্য হয়।
৩ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনীরা আজমপুর অবস্থান নিলে সেখানেও যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ১১জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর দুই সিপাহী ও এক নায়েক সুবেদার শহীদ হন। চার এবং পাঁচ ডিসেম্বর যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর প্রায় ১৭০ জন সৈন্য নিহত হয়। তখন গোটা আখাউড়া এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। যুদ্ধের পর ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া পুরোপুরি হানাদার মুক্ত হয়।
ওডি/এমবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড