• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সোনারগাঁয়ের উৎপাদিত সবজি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে

  নজরুল ইসলাম শুভ, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ

০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:১৪
সবজি চাষ
সবজি চাষে চাষি ( ছবি : দৈনিক অধিকার )

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ উপজেলার মোট কৃষি জমির পরিমাণ ১০ হাজার ৬৭০ হেক্টর। প্রায় সবকয়টি ইউনিয়নেই বছর জুড়ে নানাধরনের সবজির আবাদ করা হয়ে থাকে।

তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি বছর শীতকালীন সবজির চাষ করা হয়েছে ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে। আশার কথা হলো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের গন্ডি পেরিয়ে ২০-২৫ বছর ধরে লন্ডন, দুবাই, কানাডা, সৌদি আরব ও ইতালিসহ যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত সবজি রপ্তানি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা মনিরা আক্তার। তাদের হিসাব মতে, ৮০- ১০০ জন চাষি রয়েছেন যারা বছর জুড়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নানাধরনের সবজির চাষ করছেন।

চলতি অর্থ বছরে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩০ হাজার ২৪০ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পোকামাকড় দমনে সেক্স ফেরোমন লিউর পদ্ধতি (বিশেষ ধরনের ফাঁদ) ব্যবহারে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা অর্জন করছেন এ এলাকার চাষিরা। মাঠপর্যায়ে সঠিক পরামর্শসহ সরাসরি তত্ত্ববধান, কৃষি যন্ত্রপাতি ও উন্নত জাতের বীজ চাষিদের মাঝে প্রদানসহ বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধকরণ করে নতুন নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে অনেকেই স্বপ্ন দেখছেন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সবজি চাষের।

এছাড়া এ বছর নিরাপদ সবজির গ্রাম হিসেবে সোনারগাঁ উপজেলার দুটি ইউনিয়নের মধ্যে সনমান্দী ইউনিয়নের মগবাজার ও বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হারিয়া মধ্যপাড়া গ্রামকে ধরা হয়েছে। আর সবজি চাষে যুক্ত হয়ে দুটি ইউনিয়নের ৪৬টি গ্রামের কৃষক তাদের ভাগ্য যেমন পরিবর্তন করেছে তেমনি প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে সবজি চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোনারগাঁয়ের এই ৫০ গ্রাম থেকে শীতকালে প্রতি মাসে গড়ে ৩০ লাখ টাকার সবজি রপ্তানি হয়। এর মধ্যে লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়া, লালশাক ও পালংশাক, ধনেপাতা সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়। উচ্চ ডিগ্রি অর্জন করে অনেকে চাকরির পেছনে না ঘুরে নিজেদের জমিতে কেউ অন্যের জমি বন্ধক নিয়ে সবজি চাষ করে সংসারের অভাব ঘোচিয়েছেন।

চাষি আক্তার হোসেন বলেন, তিনি ৮ বছর ধরে ৬০ শতক জমিতে ফুল কপি ও বাঁধা কপির আবাদ করছেন। শীতের শুরুতে ভালো ফলন হওয়ায় এ বছর প্রায় ২ লাখ টাকা আয় হয়েছে। ছেলে মেয়েদের স্কুলে পড়াচ্ছেন। এক সময় তিনি অন্যের জমিতে মঞ্জুরী ভিত্তিতে কাজ করতেন। সবজি চাষের আয় দিয়ে তিনি সেমি পাকা টিনসেড ঘরও নিমার্ণ করেছেন।

দুলাল মিয়া বলেন, প্রথমে ৩০ শতক পরে তিনি ৬০ শতক জমি বন্ধক নিয়ে টমেটো, শিম, লাউ, শালঘম চাষ করছেন। ৬ বছর ধরে তিনি সবজি চাষ করছেন। এতে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি। চাকরির জন্য না ঘুরে নিজেদের জমিতে সবজির চাষ করে বেশ ভালো আছেন।

সাথী আক্তার বলেন, ৯০ শতক জমিতে প্রায় ১০ বছর ধরে সবজির চাষ করে আসছেন। তাকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছেন উপজেলা কৃষি অধিদফতরের কর্মকর্তারা। যে কোনো পরামর্শের জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে তিনি যোগাযোগ করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, সবজি চাষে তিনি রাসায়নিক সারের ব্যবহার করেন না। জৈব সারই তার ভরসা। পোকামাকড় দমনে তিনি কৃষি অফিসারদের পরামর্শ অনুযায়ী সেক্স ফেরোমন লিউর (বিশেষ ধরনের ফাঁদ) পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন। এতে সবজির ফলন বেশ ভালো হয়। খরচও কম হয়।

উপজেলার সনমান্দি ও বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা তাদের ফসলি জমিতে শাকসবজি আবাদ করছেন। অনেকে আবার সড়কের দুই পাশে, এমনকি বাড়ির আঙিনায়ও লাউ, লালশাক, পালংশাক, মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ ও মুলাসহ নানা ধরনের শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন।

ওডি/এসএএফ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড