• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নাগেশ্বরীতে জাল স্বাক্ষরের বলি প্রধান শিক্ষক!

  সারাদেশ ডেস্ক

২৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৩:০৩
প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম
প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম (ছবি : সংগৃহীত)

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির স্বাক্ষর জাল করে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে রাজাকার পুত্রের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ভুয়া মামলায় গ্রামবাসীকে হয়রানি, গ্রামবাসীর গণস্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন দপ্তরে ভুল অভিযোগ, গ্রামবাসীর ছবি চুরি ও এডিট করে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ, সাজানো সাক্ষী বানিয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রেরণ এবং ভুয়া সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কুটিপয়ড়াডাঙ্গার রাজাকার পুত্র হাফিজুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে।

হাফিজুর রহমান বাবুর অপকর্মের একান্ত সহযোগী আবুল হাসেম, ফারুক ও আপেল। প্রতারণা ও হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে গ্রামবাসী নাগেশ্বরী থানায় সাধারণ ডায়েরিসহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন। তার অপকর্মের প্রমাণও পেয়েছে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ। নাগেশ্বরী উপজেলার কুটিপয়ড়াডাঙ্গা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সকল কাগজপত্র লুট করে এবং প্রধান শিক্ষক শামসুল আলমের স্বাক্ষর জাল করে কুড়িগ্রামের জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর চাকরি হতে অব্যাহতি প্রদান সম্পর্কিত একটি পত্র প্রেরণ করেন। ফলে প্রধান দীর্ঘদিন বেতন-ভাতা গ্রহণ করতে পারেননি।

জানা গেছে, হাফিজুর রহমান বাবুর বাড়ির ট্রাংক হতে নাগেশ্বরী থানা পুলিশের সহায়তায় উক্ত বিদ্যালয়ের সকল কাগজপত্রাদি উদ্ধার করা হয় এবং হাফিজুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

পরবর্তীতে তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় হাফিজুর রহমান বাবু নিজেই বিদ্যালয়ের ভুয়া রেজুলেশন বই তৈরিসহ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেন। এছাড়াও রেজুলেশনে দেখায় যে, প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

হাফিজুর রহমান বাবু এতই ধূর্ত যে, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের নাম ভাঙিয়ে ওই প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেওয়াসহ মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে এবং বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। হাফিজুর রহমান বাবু তার অপকর্ম ঢাকার জন্য ভুয়া স্বাক্ষী বানিয়ে ও বিভিন্ন জনের স্বাক্ষর জাল করে স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রশাসনকে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে ভুল অভিযোগ করছে যাতে গ্রামে সর্বদা বিশৃঙ্খলা লেগে থাকে।

এ ব্যাপারে গ্রামবাসীর ভাষ্য, হাফিজুর রহমান বাবু দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে, গ্রামের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে, সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে প্রতিনিয়ত বাধার সৃষ্টি করছে।

তারা জানান, বাবুর প্রতারণার ফলে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে এবং গ্রামে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে গ্রামবাসী স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করে হাফিজুর রহমান বাবুকে অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে অসহায় প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম বলেন, পদ থেকে পদত্যাগ করেছি বলে আমার স্বাক্ষর জালের পর রেজুলেশন খাতা তৈরি করে ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর জাল করে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের দিয়ে অনুমোদন করায়। এর পর পাঠানো ওই চিঠিতে ঘটনা সঠিক বলে জেলা শিক্ষা অফিসারের মন্তব্য জাল করে একটি প্রতিবেদন রংপুরের উপপরিচালকের কাছে ফরওয়ার্ডিং করা হয়। সেটিও জাল। পরে সেটি ঢাকায় পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, এরপর দীর্ঘ সময় আমার বিল বন্ধ থাকে। কোনো অভিযোগ না থাকার পরও আমার বিল বন্ধ হলে একপর্যায়ে আমি ঢাকায় গিয়ে বিষয়টি জানতে পারি। পরে থানা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকল স্থানে অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু বাবু সেসব স্থানেও প্রভাব খাটাচ্ছে। তার এমন কাজের কারণে আমার বেতন বন্ধ রয়েছে।

ঘটনার কারণ সম্পর্কে শামসুল আলম বলেন, বাবুর স্থানীয় বাড়ি কুটিপায়রাডাঙ্গা। আর আমার বাড়ি কচাকাটা খানা এলাকায়। আমার চাকরি মৃত এমপি শহীদুল ইসলাম বাচ্চুর মাধ্যমে হয়। এমপির মৃত্যুর পর বাবু নিজের বা তার কোনো লোকের জন্য আমাকে সরিয়ে চাকরি নিতে চাচ্ছে। এ কারণেই এমন করেছে।

ওডি/এমআই

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড