জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় চতুর্থ শ্রেণির এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী কিশোরী ফুটফুটে কন্যা সন্তান প্রসব করে। পৃথিবীতে আসার দুই দিন পর শিশুটি মারা যায়। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার শশারীয়া এলাকার প্রদ্যুত নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে প্রায় নয় মাস আগে খেলার ছলে, পরে বিয়ের প্রলোভনে দেখিয়ে কয়েক দফা জোরপূর্বক ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে মাদারের চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানের ছেলে মো: রায়হান (১৬)।
ধর্ষক রায়হান দেওয়ানগঞ্জ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র। রায়হানের কয়েক দফা ধর্ষণের ফলে মেয়েটি গর্ভবতী হয়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ধর্ষিতার বাবা তার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়ের জন্য এলাকাবাসীর কাছে বিচার প্রার্থনা করেন। সেসময় ধর্ষকের পিতা হাবিবুর রহমান মেয়েটির গর্ভের সন্তান প্রসবের পর দুজনের বিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এবং ধর্ষণের ঘটনাটিও গোপন রাখার অনুরোধ করেন। এরই মধ্যে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে নির্যাতনের শিকার কিশোরীর একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান প্রসব করে। পরে ধর্ষক রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় মা ও সন্তান সুস্থ হলে কথা বলবেন। এভাবে দিনের পর দিন তালবাহানা করে দিন পার করেছে।
এদিকে, নবজাতক শিশু ও তার মা গুরুতর অসুস্থ হলে শিশুটিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। নির্যাতিতার স্বজনেরা ওই শিশুকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। এ সময় কিশোরীর বাবা ধর্ষক রায়হানের পিতার কাছে নবজাতক শিশু ও তার মায়ের সুচিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চান। কিন্তু রায়হানের পরিবার জানায়, এ ব্যাপারে তাদের কিছুই করার নেই।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মধ্যরাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি হাসপাতালেই মারা যায়। এ ঘটনার পর থেকে ধর্ষক রায়হান এবং তার পরিবার পলাতক রয়েছে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে মৃত কন্যা শিশুসহ নির্যাতনের শিকার কিশোরী ও তার পরিবারের সদস্যরা বিচারের আশায় দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহ নেওয়াজ শাহান শাহের বাসায় যায়। এ সময় মেয়র দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসি কে ফোন করে এ ব্যাপারে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন।
দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসি এমএম মইনুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার একটি মৃত শিশু কোলে নিয়ে নির্যাতনের শিকার মেয়েটি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থানায় মামলা করতে আসে। এ ব্যাপারে নির্যাতিতা কিশোরী নিজে বাদী হয়ে একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করে। আলামত সংগ্রহের জন্য মৃত শিশুটিকে সংরক্ষণের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বলেন, আমার মেয়েটি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। মেয়েটির সরলতার সুযোগ নিয়ে ওর জীবনটাই শেষ করে দিয়েছে ধর্ষক রায়হান। আমি তার শাস্তি চাই। আমার মেয়েটির শারীরিক অবস্থা ভালো না। তার সুচিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই।
ওডি/টিএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড