• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাঁশখালীতে মজুদ রয়েছে দুই হাজার মেট্রিক টন লবণ

  বাঁশখালী প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

২১ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৩৬
চট্টগ্রাম
লবণ চাষে ব্যস্ত চাষিরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

লবণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়েছে সুবিধাবাদী কিছু কুচক্রী মহল। দেশের কয়েকটি এলাকায় লবণের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে চড়া দামে লবণ বিক্রির খবর পাওয়া গেলেও বুধবার চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গত মৌসুমে উৎপাদিত লবণ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি মাত্র চার টাকা দরে। এ দিকে, গত মৌসুম শেষ হয়ে চলতি বছরের লবণ উৎপাদন শুরু হলেও বছর জুড়ে উৎপাদিত লবণের অস্বাভাবিক দর পতনে হতাশায় ভুগছেন উপজেলার প্রান্তিক লবণ চাষিরা।

উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর মধ্যে কক্সবাজার এবং খুলনার পর চট্টগ্রামের একমাত্র বাঁশখালীতেই লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে।

বাঁশখালীতে পুইছড়ি, ছনুয়া, শেখেরখীল, গন্ডামারা, চাম্বলের ডিপুটিঘোনা, শীলকুপের পশ্চিম মনকিচর, সরল, মিনজির তলা, কাথরিয়া, খানখানাবাদ (আংশিক) এলাকায় লবণের ব্যাপক উৎপাদন হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শীতের মৌসুমে এখানকার প্রায় কয়েক হাজার লবণ চাষি লবণ উৎপাদনের কাজে মাঠে নেমেছেন। সঠিক মূল্য না পাওয়াতে গত মৌসুমের শত শত মেট্রিকটন লবণ এখনো চাষিদের কাছে মজুদ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশখালীতে গত মৌসুমে উৎপাদিত লবণ বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ১৮০ টাকা থেকে ১৯০ টাকা দরে। সে হিসাবে বাঁশখালী তথা চট্টগ্রামে পাইকারি লবণ বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪ টাকা থেকে ৪ টাকা ৭৫ পয়সা দরে।

বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া আবাহালীর লবণ চাষি মো. রহমত উল্লাহ বলেন, আমি ৮ কানি পর্যন্ত লবণের মাঠ চাষ করি। আমার কাছে গত মৌসুমে উৎপাদিত ৫০০ মণ লবণ এখনো মজুদ আছে। গত বছর মৌসুমের শুরুতে উৎপাদিত লবণের পাইকারি দাম কম হওয়াতে আমাদের ছনুয়ায় আনুমানিক ৪০ হাজার মণ লবণ মজুদ আছে। মৌসুম জুড়ে লবণের দাম নিয়ে হতাশায় রয়েছে উপকূলের হাজার হাজার লবণ চাষি। তিনি বুধবার প্রতি মণ ১৮০ টাকা করে ৭০০ মণ লবণ বিক্রি করেছেন বলে জানান।

একই এলাকার লবণ চাষি মাহমুদুল হক বলেন, বুধবার প্রতি মণ লবণ মাত্র ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। উপকূলীয় অঞ্চলের অধিকাংশ লোকের জীবন ও জীবিকা লবণ চাষের সাথে জড়িত।

উপকূলের চাষিরা জানায়, গত মৌসুমের উৎপাদিত হাজার হাজার মেট্রিক টন লবণ অবিক্রিত রয়ে গেছে।উৎপাদিত লবণের অস্বাভাবিক দর পতন হলেও পেটের তাগিদে চাষিরা বাধ্য হয়ে কম দামে লবণ বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।

উত্তর পশ্চিম গন্ডামারা লবণ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন বলেন- এখনো আমাদের বাঁশখালীতে গত মৌসুমের উৎপাদিত প্রায় দুই হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুদ আছে। উচিত মূল্য না পাওয়াতে চাষিরা হতাশায় ভুগছেন। আমাদের সমিতির আওতায় ১২শ কানি লবণ চাষের জমি আছে। এখনো অনেক লবণের মাঠ লাগিয়ত হয়নি। চাষিরা লবণের লোকসান গুণতে গুণতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে লবণ চাষ থেকে।

তিনি আরও বলেন- এ কারণে চাষিরা চান, উৎপাদিত লবণ সরকারিভাবে ক্রয় করা হলে তারা অন্তত উৎপাদিত লবণের প্রকৃত মূল্য পেতেন। শিল্প কারখানার ব্যবহারের বিপরীতে আমদানিকৃত লাখ লাখ মেট্রিক টন লবণই জনস্বাস্থ্য ও আইনের তোয়াক্কা না করে অসাধু চক্র প্যাকেটজাত করে বাজারজাত করায় একদিকে মাঠ পর্যায়ে উৎপাদিত লবণের দরপতন শুরু হয়, যা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে।

ওডি/এমবি

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড