• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পরকীয়ার টানেই নিখোঁজ হয়েছিলেন নীপা

  বোয়ালখালী প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

২০ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:৫৬
চট্টগ্রাম
নীপা ও সন্তান (ছবি : দৈনিক অধিকার)

চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই এলাকা থেকে দুই সন্তানসহ উধাও গৃহবধূকে উদ্ধার ও নিখোঁজের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।

পরিবারের পক্ষ থেকে ফাতেমা আক্তার নীপা (২৪), ছেলে আদনান সাইদ অয়ন (৪) ও মেয়ে ফাহমিদা জাহান রিমিকে (২) সিএনজি অটোরিকশা চালক অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ করেছিল থানায়। তবে কাউন্টার টেররিজম চট্টগ্রামের একটি দল এর রহস্য উদঘাটনে নেমে আবিষ্কার করেন অপহরণ নয়, পরকীয়ার টানেই স্বেচ্ছায় দুই সন্তানসহ নিখোঁজ হয়েছিলেন বোয়ালখালীর গৃহবধূ নীপা।

তাদের প্রেমের সম্পর্ক আট বছরের। এর মাঝে নীপার পারিবারিক বিয়েতে হঠাৎ প্রেমের ছন্দপতন ঘটে। পারিবারিকভাবে নীপার বিয়ে হয় চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বাসিন্দা কুয়েত প্রবাসী রুবেলের সঙ্গে। অপর দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীর বাসিন্দা প্রেমে ব্যর্থ বাবু নামের ওই প্রেমিকও পাড়ি জমান দুবাই শহরে। এ দিকে নীপার সংসারে আসে অয়ন ও রিমি নামে দুই সন্তান। কিন্তু নীপা ও বাবুর সেই পুরনো প্রেম থেমে ছিল না।

ইমো ছিল তাদের একমাত্র প্রেমের মাধ্যম। এই প্রেমের টানেই মরুর দেশ থেকে গোপনে দেশে ফেরেন প্রেমিক বাবু। পুরোনো প্রেমিক বাবুর টানে সংসারের মায়া ছিন্ন করে দুই সন্তানকে নিয়ে উধাও হয়েছিলেন নীপা।

প্রেমিক বাবুর সঙ্গে পালিয়ে তারা গত সাত দিন ঢাকার সাভারে অবস্থান করছিলেন। তবে তদন্তের নানা ধাপ পেরিয়ে দুই সন্তানসহ কাউন্টার টেররিজমের কার্যালয় ও চান্দগাঁও থানা ঘুরে নীপা এখন নিজ বাবার বাড়ি পৌঁছেছে।

কাউন্টার টেররিজম চট্টগ্রামের প্রধান উপকমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সিএনজি অটোরিকশা করে গত ১১ নভেম্বর আমানবাজার থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে সিএনজি চালক নীপা ও তার দুই সন্তানকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়। এমন অভিযোগ ছিল পরিবারের।

তদন্তে নেমে দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি রাস্তার সব সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। অনেক চেষ্টার পর কয়েক ঘণ্টার ফুটেজ থেকে দুটি সিএনজি অটোরিকশাকে সন্দেহ করা হয়। পরে সেই দুই সিএনজি চালককেও আটক করা হয়। এর মধ্যে হালিশহরের বাসিন্দা এক চালক নিশ্চিত করেন তিনিই ছিলেন ওই দিনের সেই সিএনজি চালক।

সিএনজি চালকের বরাত দিয়ে উপকমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ আরও বলেন, আমানবাজার থেকে বোয়ালখালী যাওয়ার পথে চালককে কাপ্তাই রাস্তার মাথায় থামতে বলে নীপা। সে দুই সন্তান নিয়ে গাড়িতে বসে থাকলেও তার মাকে বলেন ভ্যান গাড়িতে থাকা কাপড় কিনতে যেতে। এরই মাঝে নীপা চালককে বলেন তাদের দ্রুত নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে নিয়ে যেতে। এ সময় চালক অপর যাত্রী তার মাকে ছাড়া যেতে আপত্তি জানান। তখন নীপা বলেন মোবাইলে কল করে তার মাকে জানাবেন জরুরি কাজে শিল্পকলায় যেতে হচ্ছে। এ কথা বলে নীপা সন্তানদের নিয়ে শিল্পকলায় চলে যান।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে দুই সন্তানসহ উধাও গৃহবধূ

মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, তদন্তে জানতে পারি এটা অপহরণ নয়, স্বেচ্ছায় নিখোঁজ। তদন্তে নাম আসে ভাটিয়ারীর বাসিন্দা দুবাই প্রবাসী বাবু নামে একজনের। বাবুর সঙ্গে নীপার গত আট বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নীপার পারিবারিকভাবে বোয়ালখালীতে বিয়ে হলেও তাদের মধ্যে ইমোতে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। যে দিন নীপা নিখোঁজ হন সে দিনই দুবাই থেকে বাবু চট্টগ্রামে আসেন। যা বাবু তার পরিবারকেও জানাননি। বিমানবন্দর থেকে সোজা দামপাড়া আসেন। সেখান থেকে হান্ডি রেস্টুরেন্টে খাওয়া শেষে সোহাগ পরিবহনের বাসে চড়ে ঢাকার সাভারের বাবুর এক বন্ধুর বাসায় উঠেন এই প্রেমিক যুগল। তবে আমাদের জালে তাদের ধরা পড়তেই হলো।

আইনগত করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, যেহেতু প্রেমের সম্পর্কের জেরে স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয়েছেন তারা। তাই এখানে বাবুরও কোনো দোষ নেই। বাবুর পরিবারকে চাপ দিলে বাবুর পরিবারই নীপাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর নীপা ও দুই সন্তানকে চান্দগাঁও থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, নীপার পরিবারের জিম্মায় তাদের হস্তান্তর করা হয়েছে। কেননা এই ঘটনায় অভিযোগ নিলে কোনো মামলা হয়নি।

ওডি/এমবি

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড