স্কুল ভবন নির্মাণে অর্ধশত কবর ধ্বংস

চাঁদপুরে স্কুলের ভবন নির্মাণ করার জন্য প্রায় ৫০টি কবর অনৈতিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। মতলব উত্তর উপজেলার বিনন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্কুলের পর্যাপ্ত জায়গা থাকা সত্ত্বেও কবরস্থান দখল হওয়ার কারণে এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

বিনন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ভবন নির্মাণ করার জন্য পুরাতন টিনশেড ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ওই স্থানে নতুন ভবন নির্মাণ করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। নতুন ভবন করার লক্ষে পাইলিংয়ের জন্য উত্তর ও পূর্ব পাশে অবস্থিত কবরস্থান ঘেঁষে প্রায় ৫০টি কবর ভেকু মেশিন দিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ সময় লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ানোর মতো অবস্থাও তৈরি হয়। কাজ স্থগিত রাখার দাবিতে স্থানীয় শতশত নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। পরে কাজ স্থগিত করার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

স্থানীয়রা বলেন, স্কুলের জন্য নির্দিষ্ট ৩৩ শতাংশ জায়গা রয়েছে। সেই জায়গায় ভবন না করে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে রাতের আঁধারে কবরগুলো ধ্বংস করেছে। স্কুলের উন্নয়ন হোক তা আমরাও চাই। কিন্তু স্কুলের পর্যাপ্ত জায়গা থাকতে কেন কবরস্থানে ভবন করতে হবে? আমাদের দাদা-দাদী, নানা-নানি ও বাবা-মার কবর ধ্বংস করে ফেলেছে তারা।

তারা আরও জানান, স্কুলের কিছু জায়গা খালে পড়ে আছে। সেখানেই মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার লাভের জন্য ওই খাল ভরাট না করে কবরস্থান দখল করেছে। আমরা কবরস্থানে ভবন হতে দেব না। জায়গা পরিমাপ করে স্কুলের জায়গায়ই ভবন নির্মাণ করার দাবি জানান এলাকাবাসী।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি তোফায়েল, সাইফুল, জসিম ও মজনু বলেন, আমাদের জানা মতে ভবন যেখানে হওয়ার কথা কথা সেখানেই কাজ চলছে। তবে উপর থেকে নির্দেশ এসেছে তাই কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসলে কাজ শুরু হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইকবাল হোসেন ভূঞা জানান, ওই স্কুলে একটি ভবন হবে সেটা আমাদের কাছে তথ্য আছে। ভবনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে সেখানেই ভবন হবে, কবরস্থানে তো হওয়ার কথা নয়। এ বিষয়টি প্রকৌশল বিভাগকে জানানোর মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, আমি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার লোকজনকে আসতে বলেছি। তারা আসলে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ওডি/এএসএল